পাইলট সংকটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সামনে রেখে এগিয়ে চলা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এখন পাইলট সংকটে ভুগছে।

করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বিমান সংস্থাটির আন্তর্জাতিক রুট ও উড়োজাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় পাইলট নিয়োগ সম্ভব হচ্ছে না।

বিমানের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিজ্ঞপ্তি দিলেও তাতে কাজ হচ্ছে না। সম্প্রতি জাল শিক্ষা সনদ ধরা পড়ায় দুই পাইলটকে বরখাস্ত করা হয়। এর পরপরই আরও দু’জন চাকরি ছেড়ে চলে যান। এতে সংকট আরও প্রকট হয়। ক্যাডেট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে বিমানের।

কাতার এয়ারওয়েজে চাকরির খবর দেখতে এখানে ক্লিক করুন

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ কর্মকর্তা) মো. ছিদ্দিকুর রহমান গত সোমবার সমকালকে বলেন, দিন দিন বাড়ছে বিমানের আন্তর্জাতিক রুটের সংখ্যা।

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উড়োজাহাজও। কিন্তু সেই তুলনায় পাইলটের সংখ্যা অপ্রতুল। উড়োজাহাজ পরিচালনা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে পাইলট সংকট। বিমানের বহরে বিশ্বের অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ থাকলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাইলট মিলছে না।

বিমানের এ কর্মকর্তা জানান, বিমানের নতুন সেটআপ (বিন্যাস) অনুযায়ী আগামীতে ৩৯২ জন পাইলটের প্রয়োজন হবে। তবে বর্তমানে প্রয়োজন ২০৬ জনের, আছেন ১৯৩ জন। প্রয়োজনের তুলনায় ১৩ জন পাইলট কম থাকায় ফ্লাইট পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে। এ পাইলট নিয়োগে এরই মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু দফায় দফায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও কাজ হচ্ছে না। এ ছাড়া বিমানে বেশ কিছু ক্যাডেট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা আছে। শিগগিরই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মো. শফিউল আজিম জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটি।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল নামে যাত্রা করা এ প্রতিষ্ঠান এখন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া মাত্র একটি ডিসি-৩ উড়োজাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু হয় বিমানের।

এখন এ সংখ্যা ২১টিতে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে লিজে আছে দুটি উড়োজাহাজ।

বিমানের সিইও বলেন, বিশ্বের ২১টি গন্তব্যে চলছে বিমানের ফ্লাইট। এর মধ্যে আছে– সৌদি আরবের রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা ও মদিনা; সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, শারজাহ ও আবুধাবি; ভারতের কলকাতা, দিল্লি ও চেন্নাই; ইউরোপের লন্ডন ও ম্যানচেস্টার; কাতার, নেপালের কাঠমান্ডু, সিঙ্গাপুরের চ্যাঙ্গি, থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর, চীনের গুয়াংজু, কানাডার টরন্টো ও জাপানের নারিতা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ সব রুটে চলছে বিমানের ফ্লাইট।

বিমান কর্মকর্তারা জানান, হজ মৌসুমে বিমানের যাত্রীদের পাশাপাশি চাপ বাড়ে ফ্লাইটের। এ সময় হিমশিম খান পাইলটরা। ফ্লাইট পরিচালনায় নির্ধারিত সময় পাইলটকে অবশ্যই বিশ্রামে থাকতে হয়। এ অবস্থায় পাইলট সংকট হলে ফ্লাইট পরিচালনায় তাদের ওপর চাপ বাড়ে।

সূত্র জানায়, ২০২১ সালের শেষ দিকে চুক্তিভিত্তিক ১৪ জন পাইলট ও কো-পাইলট নিয়োগ করে বিমান। এই পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য বিমানের খরচে বিদেশে পাঠানো হয়।

এ অবস্থায় সাদিয়া আহমেদ নামে বিমানের এক ফার্স্ট অফিসারের বিরুদ্ধে জাল শিক্ষা সনদের মাধ্যমে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) থেকে পাইলট সার্টিফিকেট নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

কাতারের সব খবর সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে ঘটনার সত্যতা মেলায় বিমান থেকে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া মেহেদী নামে বিমানের আরেক পাইলটের জাল সনদ ধরা পড়ে। পরে তাঁকেও বরখাস্ত করা হয়।

পাইলট সংকটে আরও প্রকট করে তুলেছে বিমানের আরও দুই দক্ষ পাইলটের পদত্যাগ। এ দু’জন স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়ে চাকরি ছেড়ে দেন।

আরও দেখুন

সমকাল

Loading...
,