আকাশপথে আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী বেড়েছে

দেশের আকাশপথে যাত্রী দিন দিন বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ রুটে কমলেও আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী বৃদ্ধির হার লক্ষণীয়। আগামী ১০ বছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হতে পারে।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

গত বছর আন্তর্জাতিক রুটে দেশের ৩টি বিমানবন্দরে যাত্রী বেড়েছে প্রায় ২৭ লাখ। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশের সিংহভাগ ফ্লাইট ওঠানামা করে তাই এখানে যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে ২১ লাখেরও বেশি, যা প্রায় ২৩ শতাংশ। তবে দেশের ৩টি বিমানবন্দরে কার্গো পরিবহন গত বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় ১৮ হাজার।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২০২২ সালে যাত্রী ছিল ৭৯ লাখ ২১ হাজার ৪৫৫ জন, ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ৯১৬ জন।

চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২০২২ সালে যাত্রী ছিল ৮ লাখ ৯০ হাজার ৮৩৮ জন। ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭৮ জন। আর সিলেটে ২০২২ সালে যাত্রী ছিল ২ লাখ ৫১ হাজার ৩১৫ জন। ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১০৩ জন।

কাতারের সব খবর সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

২০২২ সালে এই তিন বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী ছিল ৯০ লাখ ৬৩ হাজার ৬০৮। ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯৭ জন। ২০২২ সালের তুলনায় আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী বৃদ্ধির হার প্রায় ৩৪ শতাংশ।

অন্যদিকে কমেছে কার্গো পরিবহন। ২০২৩ সালে দেশের তিনটি বিমানবন্দরে কার্গো পরিবহন কমেছে ১৮ হাজার ৮১টি। ২০২২ সালে যেখানে কার্গো পরিবহন হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১০৬টি, সেখানে ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ২৫টি।

শাহজালালে ২০২২ সালে কার্গো পরিবহন হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮৭টি আর ২০২৩ সালে হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৭টি। চট্টগ্রামে কার্গো পরিবহন হয়েছে ৯ হাজার ৭০৪টি, ২০২৩ সালে হয়েছে ৩ হাজার ২২৪টি। আর সিলেটে ২০২২ সালে হয়েছে ১৫টি, ২০২৩ সালে হয়েছে ১৪টি।

আন্তর্জাতিক রুটে বাড়লেও অভ্যন্তরীণ রুটে এ বছর যাত্রী কমেছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৪৬ জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আকাশপথে যাত্রী বেড়েছে।

বিশেষ করে যেসব দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কাজ করতে যান, সেসব রুটে যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। টিকেটের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি টিকেট সংকটও দেখা দেয় তখন।

কয়েক বছর আগেও আকাশপথে বেশি চলাচল ছিল প্রবাসীদের। তবে এখন শিক্ষা, চিকিৎসা এবং ব্যবসার পাশাপাশি ভ্রমণের জন্যও বেড়েছে আকাশপথের চাহিদা।

আর ২০২৩ সালে কার্গো পরিবহন কম হওয়ার কারণও হচ্ছে করোনা। করোনার সময়ে কার্গো পরিবহনের ক্ষেত্রে তেমন একটা বিধিনিষেধ ছিল না। সে জন্য এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং আভাস দিয়েছে, আগামী এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়বে। ২০৩২ সাল নাগাদ এ দেশের আকাশপথেও যাত্রী সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হবে।

কোম্পানিটির এশিয়া প্যাসিফিক ও ভারতের মার্কেটিং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেভ শাল্টে বলেছেন, ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বার্ষিক জিডিপি ৫ শতাংশেরও বেশি হারে বাড়বে, যা বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড়ের দ্বিগুণেরও বেশি।

পাশাপাশি উড়োজাহাজে ভ্রমণের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার হবে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতে আঞ্চলিক ট্রাফিক বিবেচনায় আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের উড়োজাহাজ ভ্রমণ দ্বিগুণ হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএসবাংলার মহাপরিচালক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, করোনার বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়া শ্রমিকদের আসা-যাওয়ার কারণে আকাশপথে যাত্রী বৃদ্ধি পায়। তা অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, থার্ড টার্মিনাল ওপেন হলে আরও এয়ারলাইন্স আসবে, তখন যাত্রী আরও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু স্বাধীন আরেকটি রানওয়ে না হওয়ায় ২০৩২ সালে যাত্রী দিগুণ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ রুটে শুধু যশোর ও বরিশালে যাত্রী না থাকায় ফ্লাইট কমেছে।

বরিশালে যেখানে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টি ফ্লাইট চলতো, সেখানে এখন সপ্তাহে ৩টি ফ্লাইট চলে। আর যশোরে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫টি ফ্লাইট চলতো, এখন সর্বোচ ৪ থেকে ৫টি চলে। পদ্মা সেতুর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এমনটা হয়েছে।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, আমাদের আকাশপথের যাত্রী দিন দিন বাড়ছে। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে তা আরও বাড়বে। শাহজালালসহ দেশের সব বিমানবন্দরে যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে।

আরো পড়ুন-

Shomoyer Alo

Loading...
,