কাতারকে শক্তিশালী করতে পারে ইউক্রেনের যুদ্ধ

কাতার পারস্য উপসাগরের ছোট একটি দেশ। তেল ও গ্যাসে সমৃদ্ধ দেশটি বিশ্বজুড়ে গ্রাহকদের প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করে আসছে।

চলমান ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে কাতারের প্রভাব বিশ্বে আরও বাড়বে।

যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়াকে তেল ও গ্যাসের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে সেক্ষেত্রে পশ্চিমারা কাতারকে ইউরোপীয়দের ঘর গরম করা, খাবার রান্না ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানির বিকল্প উৎস হিসেবে দেখেছে।

তবে কাতার অবিলম্বে ইউরোপে অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে না। কারণ দেশটির মোট উৎপাদনের বেশিরভাগ গ্যাস বিশ্বের অন্যান্য দেশের চুক্তির অধীনে রয়েছে। তবে ২০২৭ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন দুই-তৃতীয়াংশ বাড়াতে কাতার কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে।

অতিরিক্ত উৎপাদিত গ্যাসের প্রায় অর্ধেক ইউরোপে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাতারের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি কাতারএনার্জির প্রধান সাদ আল-কাবি এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেন।

ইতোমধ্যে সবাই কাতারকে ইউরোপে এলএনজির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিকারক হিসাবে দেখছে। ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের উপসাগরীয় গবেষক সিনজিয়া বিয়ানকো বলেন, কাতারের তরল প্রাকৃতিক গ্যাস ইউরোপে পাঠানো যেতে পারে।

আল-কাবি আরও বলেন, যে দেশগুলো বলেছিলো আমাদের তেল ও গ্যাস কোম্পানির দরকার নেই এখন তারাই বলছে, আমাদের সাহায্য করুন, আরও বেশি উৎপাদন করুন, আপনারা যথেষ্ট পরিমাণে উৎপাদন করেন না ইত্যাদি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করে। ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার তেল গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমাতে জ্বালানীর অন্যান্য উত্স খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। গত বছর ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়া থেকে তাদের প্রয়োজনের প্রায় অর্ধেক গ্যাস আমদানি করেছিলো।

বিশ্বের একটি বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে কাতারের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে, রুশ আক্রমণের আশঙ্কা বাড়লে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন কাতারকে প্রধান ন্যাটো মিত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। এছাড়াও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে হোয়াইট হাউসে আতিথ্য করেন। মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের মধ্যে এই ধরনের সম্মান এটিই প্রথম ছিলো। সেই সময় বাইডেনের আলোচনায় জ্বালানি বিষয়গুলো বেশি ছিলো।

যুদ্ধ শুরুর পর, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলথানিকে একটি টেকসই গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত ও এই সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আহ্বান জানান।

এসময় ইইউ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল ফন্টেলেসসহ ইউরোপীয় নেতারা জ্বালানির আলোচনার জন্য কাতারে আসেন। জার্মানির অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেকও কাতারের সাথে গ্যাস চুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন।

গালফ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপে এড হোন এখানে ক্লিক করে

আজকের আরও খবর

গালফ বাংলা

Loading...
,