প্রবাসী আয়ে দুঃসংবাদ: জুলাইয়ে রেমিট্যান্স কমেছে ১০.২৭ শতাংশ

বিদেশি মুদ্রা আয়ের দ্বিতীয় বৃহৎ খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয় প্রবাসী আয়কে। আমদানিনির্ভর বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে খাতটি।
কিন্তু চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে দেশের প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
ডলার সংকটের এমন সময়ে প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ আরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিদেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স হিসেবে পাঠিয়েছেন ১৯৭ কোটি ডলার।
বাংলাদেশে মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় (১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে) ২১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। আগের মাসের চেয়ে এটি ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের সময় প্রবাসী আয়ের পরিমাণ বাড়ে। ঈদ-পরবর্তী মাস হওয়ায় প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কমেছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রবাসী আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরবে বলেও মনে করছেন তারা।
গত জুন মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২২০ কোটি ডলার বা ২৩ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন
অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ২৩ কোটি ডলার বা ২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা। আর গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৯ কোটি ডলার।
সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বিশেষ করে যেসব প্রবাসী অবৈধভাবে বসবাস করছেন তাদের কাছে দেশে টাকা পাঠাতে হুন্ডির কোনো বিকল্প নেই।
আবার অনেক বৈধ প্রবাসী হুন্ডিতে টাকা পাঠান ডলারের বেশি দাম পাওয়ার জন্য। দেশে খোলাবাজারের তুলনায় ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম কম দেওয়া হয়।
পাশাপাশি ব্যাংকে যাওয়া ও লাইনে দাঁড়ানোর কোনো ঝামেলা নেই হুন্ডিতে। বাড়িতে এসে টাকা পৌঁছে দেয় তারা।
তাই গ্রাহকদের কাছে ব্যাংকের চেয়ে হুন্ডিই বেশি জনপ্রিয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে বিধিনিষেধের কারণে চাইলেও প্রবাসীরা ইচ্ছেমতো টাকা পাঠাতে পারেন না।
বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম ফি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে।
পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন
রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর চার্জ মওকুফ করা।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্য বিদায়ী মাসে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় সংগ্রহ করে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক। তবে চলতি মাসে সাতটি ব্যাংক কোনো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রের মালিকানায় থাকা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের সিটিজেন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
আরও পড়ুন
গালফ বাংলা
