বাংলাদেশিকে ধরতে ২০ হাজার ডলার পুরস্কারের ঘোষণা এফবিআইয়ের

আমেরিকার নিউইয়র্কে অপহরণ, নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন ও মুক্তিপণ দাবির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক বাংলাদেশিকে খুঁজছে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

তাঁকে ধরিয়ে দিতে ২০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।

এফবিআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টারে বলা হয়, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া ওই ব্যক্তির নাম রুহেল চৌধুরী (৩৪)। নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় গেল ২৭ মার্চ ও ১১ মে দুটি অপহরণের ঘটনায় তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা জড়িত।

এসব ঘটনায় ৯ জানুয়ারি রুহেলকে নিউইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। রুহেল চৌধুরী বিরুদ্ধে অভিযোগ, অপহরণের সময় ব্যবহৃত গাড়িগুলো তিনি সরবরাহ করেন এবং ভুক্তভোগীদের নির্যাতন করেছেন।

এফবিআই জানিয়েছে, রুহেলকে গ্রেপ্তারে সহায়তার করলে ২০ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। কুইন্সের হোলিস, কুইন্স ভিলেজ ও জ্যামাইকা এলাকার সঙ্গে রুহেলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

কাতারের সব আপডেট পেতে যুক্ত হোন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে

তাঁর খোঁজ পেলে স্থানীয় এফবিআই কার্যালয় বা নিকটস্থ মার্কিন দূতাবাস বা কনস্যুলেটে যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়।

এদিকে নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ জানিয়েছে, অপহরণের এসব ঘটনায় রুহেল ছাড়া আরও ছয়জন জড়িত ছিলেন।

এসব ঘটনায় ৩৪ বছর বয়সী আবু চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী ২৪ বছর বয়সী ইফফাত লুবনাসহ আরও ছয়জনকে গত বছর এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে শুধুমাত্র রুহেল চৌধুরী পলাতক রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ২৭ মার্চ কুইন্সের জ্যামাইকা থেকে এক প্রবাসীকে অপহরণের পর প্রায় ১৪ ঘণ্টা নির্যাতন করে ওই চক্র।জ

্যামাইকার ১৮১ স্ট্রিট এবং হিলসাইড অ্যাভিনিউ এলাকার রাস্তা থেকে ওই ব্যক্তিকে জোর করে একটি হোন্ডা এসইউভিতে তোলেন আবু চৌধুরী। গাড়িতে তোলার পর ওই প্রবাসীকে তিনি পেটাতে থাকেন। সে সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রুহেল।

একপর্যায়ে সেই ব্যক্তিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার মধ্যে নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করে অপহরণকারীরা। আবু চৌধুরী তাঁর ফোনে সেই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করেন।

রুহেল চৌধুরী, সৈয়দ রুবেল আহমেদ, সাহেদ আলম, আঞ্জু খান ও সুলতানা রাজিয়াও এই নির্যাতনে অংশ নেন। চলন্ত গাড়ির ভেতর রাতভর ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন চলে।

একপর্যায়ে তিনি পানি চাইলে অপহরণকারীরা তাঁকে চেতনানাশক মেশানো পানি দেওয়া হয়। তা পান করে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরদিন নিজেকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে দেখতে পান ওই ভুক্তভোগী।

এরপর গত বছরের ১১ মে কুইন্সেরই উডসাইড এলাকায় অপহরণের অন্য ঘটনাটি ঘটে। উডসাইডে ৭২ স্ট্রিট এবং ব্রডওয়ে এলাকায় এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে ডেকে নিয়ে যান লুবনা। সেখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকেই ছিলেন লুবনার স্বামী আবু চৌধুরী। তিনি ওই প্রবাসীকে জোর করে একটি মিনিভ্যানে তুলে মারধর শুরু করেন।

ওই মিনিভ্যানও চালাচ্ছিলেন রুহেল। তিনি গাড়ি চালিয়ে ওই প্রবাসীকে নিয়ে যান একটি হোটেলে। সেখানে ওই ব্যক্তিকে ধর্ষণ করেন আবু চৌধুরী।

পরে ভুক্তভোগীর বাবাকে ফোন করে ২০ হাজার ডলার মুক্তিপণ দাবি করেন আবু চৌধুরী। ফোনকল চলার মধ্যেই ভুক্তভোগীকে পেটানো হয়, যাতে তাঁর চিৎকার তাঁর বাবা শুনতে পান। এ সময় ভুক্তভোগীর বাবাকে হুমকি দিয়ে আবু চৌধুরী বলেন, এ ঘটনা পুলিশকে জানালে তাঁর সন্তানকে হত্যা করা হবে।

গত বছর জুলাই মাসে এ মামলায় আবু চৌধুরী ও লুবনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি বাকিদের গ্রেপ্তার করে ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টে হাজির করা হয়। রুহেলকে গ্রেপ্তার করা গেলে তাঁদের সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে।

আরো পড়ুন-

itv

Loading...
,