বিদেশফেরত কর্মীদের সহায়তার প্রকল্পে যত অনিয়ম!

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। করোনায় কাজ হারিয়ে ফিরে আসা কর্মীদের জন্য রিকভারি অ্যান্ড এডভান্সমেন্ট অব ইনফর্মাল সেক্টর (রেইজ) প্রকল্পের আওতায় গত ৩০ জুলাই দেশের ২৯ জেলায় চালু হয়েছে ৩০টি ওয়েলফেয়ার সেন্টার।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

ওয়েলফেয়ার সেন্টার শুরুর মধ্যে দিয়ে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলেও তার আগেই প্রকল্পের অর্থ হয়েছে লোপাট। প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অধীনে এই প্রকল্পের সাবেক পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

তদন্তেও পাওয়া গেছে আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ। তবে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে প্রকল্প পরিচালকের পদ থেকে শুধু তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে কোভিডের কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের রিইন্টিগ্রেশন প্রজেক্টের সাবসিডি চুক্তি সই হয়।

এর আগে ২৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেন। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি অর্থ বিভাগের সঙ্গে কল্যাণ বোর্ডের সাবসিডিয়ারি গ্র্যান্ট এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।

বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে ৪২৫ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্পে দিয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ৪২৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। তবে দেরিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় এর মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসের আয়-ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্প দফতরে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।

প্রতি মাসে গড়ে খরচ ২৬ লাখ ৬৫ হাজার। প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগে এই খরচ অনেক বেশি বলে মনে করে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কর্মকর্তারা।

মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অধিশাখা সাত মাসের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে এই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি দেয় তৎকালীন প্রকল্প পরিচালকের কাছে।

চিঠিতে কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালককে প্রকল্পের কাজের ফিজিক্যাল প্রোগ্রেস এবং ব্যয় বিবরণী নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

কাতারের সব খবর সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

সাত মাসের ব্যয়ে অনিয়ম

প্রকল্পের সাত মাসের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে জানা যায়, সাত মাসে গাড়ি ভাড়া বাবদ ৩৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৫০ টাকা খরচ করা হয়েছে। গাড়ির পেছনে প্রতি মাসে ব্যয় করা হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার টাকা।

এছাড়া কনসালটেন্সি ব্যয় ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ২১ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৬ টাকা। অর্থাৎ প্রতিমাসে ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে।

কম্পিউটার সামগ্রী, যেমন-প্রিন্টারের টোনার ও পেনড্রাইভ কেনায় ব্যয় হয়েছে ১২ লাখ ১২ হাজার ৩২৬ টাকা। পাশাপাশি প্রকল্পের দফতরের জন্য কাগজ-কলম কিনতে সাত মাসে খরচ হয়েছে ১০ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৬ টাকা।

অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ টাকার কাগজ-কলম কেনা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেট বাবদ ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার টাকা, অর্থাৎ প্রতি মাসে ইন্টারনেট বিল দেওয়া হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা।

অনিয়মের সাজা ‘সরিয়ে দেওয়া’

নানা অনিয়মে তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয় সাবেক প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদকে । জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত ২৪ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাকে বদলি করা হয় ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বর্তমান পদ ও কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে তার চাকরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হল। সেখানে ২৭ এপ্রিল তিনি যোগদান করেন।

পরবর্তীতে পুনরায় ৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে তথ্য কমিশনের পরিচালক পদে বদলি করে। ৮ অক্টোবর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে অবমুক্ত করে দিলে ৯ অক্টোবর তিনি তথ্য কমিশনে যোগদান করেন।

মন্ত্রণালয়ের তদন্তে জানা যায়, অর্থের বিনিময় অফিস সহকারী নিয়োগ, প্রকল্প কার্যালয়ে বসে অনৈতিক কাজ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম, আপ্যায়ন বিলে অনিয়ম, প্রকল্প অফিসের ইন্টেরিওর বিলে অনিয়ম, আসবাবপত্র কেনায় ও ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের উপ-পরিচালক অনিয়ম করে ক্রয় করা মালামাল বুঝে না পাওয়ায় বিল পরিশোধে আপত্তি জানালে তার বিরুদ্ধেও সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেন সাবেক প্রকল্প পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ।

প্রচার-প্রচারণায় অতিরিক্ত খরচ, জ্বালানি খরচ ২০ লাখ

কর্মকর্তারা তদন্তে নেমে জানতে পারেন, প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু না হলেও প্রচার-প্রচারণার নামে খরচ দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

বিশ্বব্যাংকের পলিসি অনুযায়ী কোটেশন আহ্বানের মাধ্যমে কেনার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা অনুসরণ না করে জে অ্যান্ড জেড এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করা হয়।

এছাড়া গাড়ি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কিলোমিটার অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে চুক্তির মাধ্যমে। ১২ মাসে গাড়ি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে জ্বালানি খরচ বাবদ দেওয়া হয়েছে ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। গাড়ির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দেওয়া হয় ১৩ লাখ টাকা।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন মহাপরিচালকের জন্য সরকারি হিসাব অনুযায়ী ঢাকায় চলাচলের জন্য বরাদ্দ ২০০ লিটার জ্বালানি। সে হিসাবে ১২ মাসে প্রকল্প পরিচালকের হ্যারিয়ার গাড়ির জ্বালানি খরচ বাবদ প্রাপ্য ৩ লাখ ১২ হাজার টাকা, তবে উত্তোলন করা হয়েছে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা ট্যাক্সসহ।

সে হিসাবে ৭ লাখ ৮ হাজার টাকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত ১২ মাসে স্টাফদের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের জ্বালানি বাবদ ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রেও লগ বই অনুযায়ী বিল পরিশোধ করা হয়নি।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে মাইক্রোবাসের জ্বালানি বাবদ মাসিক ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

সে হিসেবে ১২ মাসে মাইক্রোর জ্বালানি বাবদ খরচ হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে।

সার্বিকভাবে দেখা যায়, দুটি গাড়ির জ্বালানি বাবদ গাড়ি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৩ লাখ ৮ হাজার টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন প্রকল্প পরিচালক মুশরারাত জেবীন গত ১ এপ্রিল যোগদান করার পর এসব অনিয়ম ধরা পড়ায় গাড়ি ভাড়ার চুক্তি এই বছরের ১ জুন থেকে বাতিল করা হয়।

টাকার বিনিময়ে অফিস সহায়ক নিয়োগ

সাবেক প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদের বিরুদ্ধে মো. আকাশ হোসেনকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে প্রকল্পের অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ আছে।

মন্ত্রণালয়ে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত সাজিদের মাধ্যমে এই টাকা আদায় করা হয়। আকাশকে পরবর্তীতে অফিস সহায়ক থেকে বাদ দেওয়া হলে তিনি টাকা ফেরত চান।

আকাশের সঙ্গে আব্দুল ওয়াদুদ একাধিকবার ফোনে কথা বলে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ায় আকাশ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিতে গেলে সাজিদ নামক এক কর্মচারী টাকা টাকা ফেরত দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

পরবর্তীতে নানা টালবাহানার পর সাজিদ নগদ এক লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট টাকা পরিশোধের জন্য নিজস্ব হিসাবের নামে ব্যাংক চেক দেন। কিন্তু অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের জানান আকাশ।

স্পেশালিস্ট নিয়োগে অনিয়ম

মন্ত্রণালয়ের তদন্তে প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট ও সিনিয়র ফিন্যানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট নিয়োগ আবেদনেও অনিয়ম পাওয়া গেছে।

তদন্তে দেখা যায়,আবেদনে মাসিক ট্যাক্সসহ ৪ লাখ টাকা সম্মানির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নেগোসিয়েশনে সম্মানি না কমিয়ে সাবেক প্রকল্প পরিচালক ভ্যাটের অর্থও প্রকল্প থেকে দিয়ে ট্যাক্স-ভ্যাটসহ মোট ৪ লাখ টাকার সম্মানিতে চুক্তি করা হয়েছে।

পাশাপাশি সিনিয়র ফিন্যানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্টের (এসএফএমএস ) চাকরির আবেদনে দেখা যায়, আবেদনকারী মাসিক ৩ লাখ টাকা সম্মানি দাবি করেন।

আবেদনে ট্যাক্স-ভ্যাট এর বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই। কিন্তু নেগোশিয়েশানে ট্যাক্স-ভ্যাটসহ মোট ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার সম্মানিতে সাবেক প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে চুক্তি করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে এসএফএমএস-এর দক্ষতা পুনর্মূল্যায়ন করার কথা উল্লেখ থাকায় এবং এরপর বিশ্বব্যাংক থেকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়ায় গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রকল্প এবং তার মধ্যে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয়টি স্পষ্ট।

কর্মকর্তারা আরও জানান, অধিকাংশ ক্রয়ে অনিয়ম পাওয়ায় বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে আপত্তি প্রদান, মৌখিকভাবে অনুরোধ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট কর্তৃক স্বেচ্ছায় চুক্তি বাতিলের আবেদন করায় গত ১ আগস্ট তার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

প্রকল্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনিয়ম

সাবেক প্রকল্প পরিচালকের সময় জনতা ব্যাংকের মগবাজার শাখায় প্রকল্পের জন্য একটি বিশেষ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। সেই হিসাবে জমাকৃত অর্থের বিপরীতে সাত মাসে মাত্র ৯ লাখ টাকা সুদ জমা করা হয়।

কিন্তু অর্থ বিভাগ এবং জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৬০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা সুদ পাওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে নথিতে লিখিত আপত্তি জানান প্রকল্পের উপপরিচালক।

পরবর্তীতে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হলে এই বছরের জুন পর্যন্ত ৯৮ লাখ টাকা সুদ হিসাবে আদায় করা হয়।

সাবেক প্রকল্প পরিচালকের কাছে আর্থিক অনিয়মের ব্যাখ্যা দাবি

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অধীনে থাকা এই প্রকল্পে আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে সাবেক প্রকল্প পরিচালক মো. ওয়াদুদ হোসেনের কাছে।

গত ১৩ জুলাই কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান এক চিঠিতে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তার বক্তব্য জানতে চেয়েছেন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রেইজ প্রকল্পে কম্পিউটার সামগ্রী কেনা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের অনুমোদিত প্রক্রিয়া ভেঙে, বিশ্বব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া মালমালা কেনা হয়েছে প্রকল্পের কাজে।

এছাড়া ইন্টারনেট সংযোগ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাবলিক প্রকিওরমেন্ট বিধিমালা অনুসরণ না করে ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন এবং বিল দেওয়া হয়েছে। একই কাজ করা হয়েছে প্রকল্প কার্যালয়ের ইন্টেরিওর কাজ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষেত্রেও।

দুই বছরে তিন প্রকল্প পরিচালক

২০২১ সালে চুক্তির পর এখন পর্যন্ত তিনজন প্রকল্প পরিচালক যোগদান করেছেন। আব্দুল ওয়াদুদকে অবমুক্ত করার পর তার স্থলে যোগদান করেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক ও যুগ্মসচিব মুশাররাত জেবীন।

গত ১ এপ্রিল যোগদান করার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (বেজা) বদলি করে। সেজন্য তাকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ২০ সেপ্টেম্বর অবমুক্ত করা হয়। তার জায়গায় নতুন প্রকল্প পরিচালক হিসেবে গত ১৯ অক্টোবর যোগদান করেন সৌরেন্দ্র নাথ সাহা।

এত অল্প সময়ে প্রকল্প পরিচালক পদে এত রদবদল কেন জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হয়তো অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে।

এজন্য হয়তো ভালো প্রকল্প পরিচালক … এখন যিনি আসছেন আশা করি উনি থেকে যাবেন।

কাতার এয়ারওয়েজে চাকরির খবর দেখতে এখানে ক্লিক করুন

অনিয়মের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তদন্ত চলছে। আমরা এটার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো। এই প্রকল্প কিংবা মন্ত্রণালয়ের যেকোনও প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেবো, সেটা যে কেউ হোক।

আরও পড়ুন

বাংলা ট্রিবিউন

Loading...
,