বিমানের সংখ্যা কমিয়েছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো

দেশের চলমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের প্রভাব পড়েছে দেশের সেবা খাতে। বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইনস, শিপিং কোম্পানি কুরিয়ার সার্ভিসসহ নানা খাতে এ সংকট প্রকট হয়েছে।
বিদেশি কোম্পানির কাছে তাদের পাওনা পরিশোধ করতে না পারার কারণে কোনো কোনো সেবা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্বনামধন্য এয়ারলাইনস কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের সেবা সীমিত করেছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন অবস্থা চলতে থাকলে সেবা খাতে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হবে।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
সিভিল এভিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিমান এবং বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো ইউএইতে নিয়মিত বিমান পরিচালনা করছে।
বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে অর্থ প্রেরণ করতে না পারায় অনেক এয়ারলাইনস তাদের বিমান পরিচালনা সীমিত করেছে। শুধু ইউএই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশসহ পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপের অনেক দেশ একই পথ ধরেছে।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন
ক্যাব সূত্রে জানা গেছে, ইউএই বাংলাদেশে থেকে সপ্তাহে মোট ১৪০টি বিমান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে এয়ারলাইনসগুলো ৬৫ থেকে ৭০টি বিমান পরিচালনা করছে।
অপরদিকে ইউএই থেকে বাংলাদেশে সপ্তাহে ১৪০টি বিমান পরিচালনার অনুমোদন রয়েছে। এক্ষেত্রে এয়ারলাইনসগুলো সপ্তাহে পরিচালনা করছে ১১৮টি ফ্লাইট।
সিঙ্গাপুর, টার্কিশ, কাতার, সৌদিসহ অনেক নামিদামি এয়ারলাইনস তাদের বিমানের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থার মধ্য দিয়েও ক্যাব নতুন এয়ারলাইনসের অনুমোদন দিয়েছে।
যার ফলে বর্তমানে পরিচালনাকারী এয়ারলাইনসগুলো প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়বে। বিশেষ করে উইজ এয়ার লো-কস্ট এয়ারলাইনস হওয়ায় চাপ আরো বাড়বে।
কারণ এ এয়ারলাইনস খরচেরও কম দামে টিকিট বিক্রি করে। বাংলাদেশ বিমানের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এমনিতেই রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা নানা চাপের মুখে আছে।
ইজ এয়ারের মতো বিমান সংস্থা পরিচালনার অনুমোদন পেলে বিদ্যমান এয়ারলাইনসগুলো পথে বসবে।
বাংলাদেশে সেবা খাতের যেসব কোম্পানি ব্যবসা করে তাদের পাওনা দিতে না পারলেও সরকারের কোনো কোনো দপ্তর সেবা খাতে নতুন নতুন কোম্পানিকে অনুমোদন দিচ্ছে।
বিশেষ করে লো-কস্ট (কম খরছে) বিভিন্ন এয়ারলাইনস বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য অনুমোদন নেওয়ার অপেক্ষায় আছে।
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ (ক্যাব) সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ মে থেকে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ইউএই কনসালটেশন বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।
সেখানে লো-কস্ট বিমান পরিবহন সংস্থা ইউজ এয়ারকে বাংলাদেশ-ইউএই রুটে বিমান পরিচালনার অনুমোদন দেওয়ার কথা রয়েছে। জানা গেছে, বিমান পরিচালনার অনুমতি প্রদানের বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেটি করা হয়নি।
তবে ক্যাব সূত্র জানিয়েছে, অনুমোদনের পর বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু বিমান সংস্থাই নয়, দেশের সেবা খাতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিদেশি কোম্পানির অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন অধিদপ্তর।
এর ফলে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা চলে যাওয়ায় তা রিজার্ভের ওপর চাপ ফেলছে। এ বিষয়ে মন্তব্য চাইতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ (ক্যাব) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি টেলিফোন রিসিভ করেননি।
এরপর তাকে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি রেসপন্স করেননি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিমানকে লাভজনক করতে এর বহরে নতুন ১০টি এয়ারক্রাফট কেনার জন্য এয়ারবাসের সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য সফরের সময় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নতুন এয়ারলাইনসগুলো বাংলাদেশ বিমানের বহরে যুক্ত হলে সেগুলোও নতুন করে প্রতিযোগিতায় পড়বে।
শিপিং খাতের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ খাতের কোম্পানিগুলোর অধিকাংশই ছয় মাস ধরে তাদের প্রিন্সিপালের পাওনা পরিশোধ করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে দেনদরবার করেও এ জট খুলছে না। এছাড়া বাংলাদেশে এখন অনেক বড় বড় কুরিয়ার কোম্পানি কাজ করছে।
তাদেরকেও তাদের প্রিন্সিপালের কাছে বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ পাঠাতে হয়। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে মূল কোম্পানিকে অর্থ পাঠাতে পারছেন না উদ্যোক্তারা।
আরো পড়ুন
ইত্তেফাক
