বিমান ভ্রমণে যেসব কাজ করা মানা

বিমান ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন না এমন মানুষ কমই আছেন। আকাশে উড়তে কে না চান? তবে বিমান ভ্রমণ নিয়ে মনে থাকে সংশয়। অনেক নিয়মকানুন মানতে হয় এই যানটিতে।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দর ও ফ্লাইটগুলো বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলে। এসব নিয়ম ভাঙলে আপনাকে গুণতে হতে পারে মোটা অঙ্কের জরিমানা।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
এমনকি নির্দিষ্ট ফ্লাইটে কালো তালিকাভুক্ত হওয়া কিংবা দীর্ঘ জেলের সাজাসহ গুরুতর শাস্তি পেতে পারেন।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়াতে জেনে নিন বিমানে কোন কাজগুলো করা যাবে না।
কার্বনেটেড পানীয় পান করা
যদিও কোমল পানীয় এবং স্পার্কিং ওয়াটারের মতো অন্যান্য কার্বনেটেড পানীয় ফ্লাইটে পরিবেশন করা হয়, তবে এগুলি ন্যূনতম পরিমাণে সেবন করা বা সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
উচ্চ উচ্চতায়, কার্বনেটেড পানীয়গুলি অন্ত্রের গ্যাসের বিল্ডিং ৩০ শতাংশ পর্যাপ্ত বাড়ায়। ফলে, চাপ কমে যাওয়ার কারণে, এটি পেটে মারাত্মক ফোলাভাব এবং বমি বমি ভাব সৃষ্টি করতে পারে।
আপনার যদি কোনো ধরনের পেটের সমস্যা থাকে তবে বিমান যাত্রায় অবশ্যই কার্বনেটেড পানীয় এড়িয়ে চলুন। নয়ত দীর্ঘযাত্রা অশান্তিময় হতে পারে। তারচেয়ে বরং বোতলজাত পানি বা ফলের রস পান করুন।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন
অন্যদিকে, ক্রুরাও কোমল পানীয় এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন। কারণ উচ্চ উচ্চতায় এগুলো ঢেলে পরিবেশন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
পায়ের জুতা-মোজা খোলা
দীর্ঘসময় পায়ে জুতা পরে বিরক্ত লাগছে। ভাবছেন জুতা আর মোজা খুলে আয়েশ করে বসবেন? বিমানে ভ্রমণ করলে এই কাজটি করবেন না। অনেকের পায়ে দুর্গন্ধ হয়।
মোজার গন্ধ যেন অন্য যাত্রীদের অস্বস্তির কারণ না হয়ে সেজন্য এই কাজটিতে বাধা দেওয়া হয়।
সিট বেল্ট পুরোসময় আটকে রাখা
নিরাপত্তার জন্য শুরুতেই সিট বেল্ট বেঁধে নিতে বলা হয়। ফ্লাইটের সময় রক্ত সঞ্চালনের গতি ধীর হয়। কয়েক ঘণ্টা একরকমভাবে বসে থাকলে থ্রম্বোসিস, রক্তনালীতে জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
তাই নির্দিষ্ট সময় এই বেল্ট খুলে ফেলতে বলা হয়। এসময় মসৃণ রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত করার জন্য দাঁড়ানো, স্ট্রেসিং বা চারপাশে চলাফেরা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে হ্যাঁ, আপনি যদি মাঝের সিটের যাত্রী হন তবে চলাচল অত বেশি করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে সিটে বসেই পা প্রসারিত করে রক্ত চলাচল সচল রাখুন।
শিশুদের এদিক-ওদিক ছুটতে দেওয়া
লিখিত না হলেও বিমানে এই নিয়মটি মানতে হবে আপনাকে। শিশুকে নিয়ে ভ্রমণ করলে তাদের হাতছাড়া করা যাবে না। ফ্লাইটগুলো সুনসান পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করে।
যেন কোনো যাত্রী চাইলে ঘুমিয়ে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে শিশুদের দৌড়াদৌড়ি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাছাড়া ছুটোছুটি করতে গিয়ে শিশুরা আহতও হতে পারে।
কন্টাক্ট লেন্স পরা
কী অদ্ভুত শোনাচ্ছে? হ্যাঁ, বিমান ভ্রমণে কন্টাক্ট লেন্স এড়িয়ে চলার পরামর্শই দেওয়া হয়। এই লেন্স চোখকে আরও বেশি শুষ্ক করে দেয়। ফলে কেবিনের অভ্যন্তরে শুষ্ক বাতাসে খুব অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
বিমান ভ্রমণে কন্টাক্ট লেন্সের পরিবর্তে চশমা ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে একদিনের লেন্স পরুন। সঙ্গে চোখের ড্রপ রাখতে ভুলবেন না যেন।
বোমা নিয়ে মজা করা
হাসতে আর হাসাতে ভালোবাসেন অনেকেই। বর্তমানে প্র্যাঙ্কের ট্রেন্ড চলছে। তবে বিমানের ভেতরের জায়গাটি মোটেও মজা করার নয়। কখনোই বোমা নিয়ে মজা করবেন না।
সেখানে প্রতিটি শব্দকেই বেশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়। অতীতে বিমানে বোমা হামলার অনেক ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া বোমার কথা শুনে যাত্রীরা আতঙ্কিতও হতে পারেন। এমন মজার জন্য আপনাকে সাজাও ভোগ করা লাগতে পারে।
ফ্লাইটের আগে বা ফ্লাইটে নেশা করা
বিমান ভ্রমণে মদ্যপান করা যাবে না। ফ্লাইটের আগে বা ফ্লাইটে নেশা করা আপনার জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি অন্য যাত্রীদের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। নেশাগ্রস্ত যাত্রীদের দ্রুত বমি বমি ভাব হতে পারে।
তাছাড়া নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের আচরণে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বিমানে চড়ে মাতলামি করলে আপনাকে যেতে হতে পারে জেলে। এমনকি ফ্লাইট থেকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা থাকবে। তাই নেশাজাতীয় সব জিনিস থেকে দূরে থাকুন।
ধূমপান করা বা ভ্যাপ গ্রহণ করা
৯০’ দশকের আগে বিমান ভ্রমণে সিগারেট খাওয়ায় মানা না থাকলেও বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় সব এয়ারলাইন্সই এটি নিষিদ্ধ করেছে। হয়তো ভাববেন বিমানের টয়লেটে গিয়ে লুকিয়ে সিগারেট, ভ্যাপ বা ই-সিগারেট দিয়ে ধূমপান করেন।
এমন সুযোগ কিন্তু নেই। বেশিরভাগ বিমানেই এখন স্মোক ডিটেক্টর ইনস্টল করা আছে। তাই এই নিয়ম ভঙ্গ করলে আপনি গুরুতর সমস্যায় পড়তে পারেন।
দরজা খোলার চেষ্টা
হাওয়া খেতে মন চাইলো আর মাঝ আকাশে বিমানের দরজা খুলে দিলেন এমন ভুল কখনোই করা যাবে না। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি জানালা খোলার নিয়ম নেই বিমান ভ্রমণে।
এছাড়াও বিমানে যেমন যেসব কাজ করা ঠিক নয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো সিট বেশি হেলিয়ে বসা, অতিরিক্ত কথা বলা, বাইরের খাবার নিয়ে বিমানে ওঠা, যৌন সম্পর্ক করা। এসব বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
আরো পড়ুন
DhakaMail
