‘ভারতের বিপক্ষে গোল করে বাংলাদেশকে জেতাতে চাই’

এক গোলে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ তখন শেষ পর্যায়ে থাকায় বাংলাদেশ শিবিরে তিন পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা! এমন পরিস্থিতিতেই জ্বলে উঠলেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। তার করা গোলে আফগানিস্তানের সঙ্গে ১-১ ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল।

এক পয়েন্ট আদায় করতে পারায় দলের সবাই ভীষণ উচ্ছ্বসিত। এরমধ্যে তপু বর্মণ অবশ্য একটু ব্যতিক্রম। অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসলেও এখানেই থেমে থাকতে রাজি নন।

তিনি মনে করছেন, বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের বাকি দুই ম্যাচে এখন আরও দায়িত্ব বেড়ে গেছে তার। সাক্ষাৎকারে সে কথাই বলেছেন।

প্রশ্ন: প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটিতে বাংলাদেশ আপনার গোলে ড্র করেছে। রাতে নিশ্চয়ই প্রশান্তির ঘুম হয়েছে? চারদিক থেকে তো অনেক অভিনন্দন বার্তা পাচ্ছেন…।

উত্তর: হ্যাঁ, ঘুম তো ভালোই হয়েছে। আফগানদের মতো দলের বিপক্ষে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছি। কিন্তু এখানেই থেমে থাকতে চাই না। এমন পারফরম্যান্স সামনের ম্যাচগুলোতেও দেখাতে চাই। আর গোলের পর দেশ ও দেশের বাইরে থেকে সবাই নানাভাবে বেশ প্রশংসা করছেন।

প্রশ্ন: সামনে তো আরেক শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। আপনাদের পরিকল্পনা কী?

উত্তর: আসলে আফগানিস্তান ম্যাচের পর থেকে ভারতের বিপক্ষেও প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের সব চিন্তা এখন ৭ জুনের ম্যাচকে ঘিরে। যদি সুযোগ পাই, তাহলে ভারতের বিপক্ষে এমন গোল করে বাংলাদেশ দলকে জেতাতে চাই।

প্রশ্ন: ভারতকে হারানো সম্ভব বলে মনে করছেন?

উত্তর: কেন সম্ভব হবে না? এর আগে তো আমরা এগিয়ে গিয়ে শেষ মুহূর্তে ড্র করেছিলাম। এবার সবাই ভালো খেলতে পারলে তিন পয়েন্ট নেওয়া কঠিন হবে না।

প্রশ্ন: আফগানিস্তান ম্যাচে ৪৭ মিনিটে গোল খেলেন। গোলের পর আপনারা কী ভাবছিলেন?

উত্তর: তখন অমরা ঠিক করেছি আর গোল খাওয়া চলবে না। সুযোগ পেলেই গোল দিতে হবে। ৭০ মিনিটের পর আফগানরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখনই আমরা আক্রমণে উঠি। মতিনসহ অন্যরা চেষ্টা করেছে। একপর্যায়ে আমি সুযোগ পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেছি।

প্রশ্ন: আপনার গোলে বাংলাদেশ দল এক পয়েন্ট পেয়েছে। গোল পাবেন, এমন চিন্তা করেছিলেন?

উত্তর: আমি সেট পিস কিংবা ডেড বলে সাধারণত ওপরে উঠে খেলি। ওভারল্যাপ করেও প্রতিপক্ষের বক্সে হানা দেই। তখন মানিক মোল্লার ফ্রি-কিকের পর রিয়াদুলের হেড থেকে বল বুক দিয়ে নামিয়ে একটাই চিন্তা করি, যে করেই হোক বল জালে জড়াতে হবে। দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে অনায়াসে তা-ই করতে পেরেছি। এখন এটা নিয়ে ভাবলেও অন্যরকম শিহরণ জাগে।

প্রশ্ন: অনুশীলনে নিশ্চয়ই গোল নিয়ে আলাদা কিছু কাজ করা হয়।

উত্তর: হ্যাঁ, তো তো অবশ্যই। চার জন চার জন করে যখন অনুশীলনে ৩০/৪০ মিটার মাঠ করে খেলে থাকি, তখন গোল দেওয়ার চেষ্টা থাকে। যে কারণে গোল করাটা সহজ হয়ে গেছে। এছাড়া আমার লক্ষ্য থাকে সুযোগ পেলেই প্রতিপক্ষের সীমানায় গিয়ে কিছু একটা করার।

প্রশ্ন: ডিফেন্ডার হয়েও আন্তর্জাতিক ম্যাচে চার গোল হলো আপনার। কেরালায় ২০১৫ সালে সাফে ভুটান ম্যাচে প্রথম গোল করেছিলেন। এরপর ২০১৮ সালের সাফেও দুটি গোল আছে। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোল পেলেন। কোন গোলটিকে এগিয়ে রাখবেন?

উত্তর: সব গোলই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমি দোহাতে কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে সমতাসূচক গোলটাকেই একটু বেশি এগিয়ে রাখবো। কারণ, এই গোলটা দলের জন্য খুব দরকার ছিল। এছাড়া আফগানিস্তান অনেক শক্তিশালী দল ছিল।

প্রশ্ন: ডিফেন্স লাইনে ফিনল্যান্ড প্রবাসী কাজী তারিককে কেমন মনে হয়েছে।

উত্তর: অভিষেক ম্যাচে কাজী তারিক ভালো খেলেছে। রাইট ব্যাকে ভালোভাবে সামলেছে। প্রথম ম্যাচ হিসেবে খারাপ করেনি।

প্রশ্ন: কাতারে ৯০ মিনিটই বাংলাদেশ দলকে পরিশ্রম করে খেলতে হয়েছে। কোনও সময় ক্লান্ত মনে হয়নি। খেলা তো হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাঠে…।

উত্তর: ঢাকায় আমরা প্রচণ্ড গরমের মধ্যে অনুশীলন করেছি। কাতারেও তাই। এমন কন্ডিশনে খেলায় স্ট্যামিনা বেড়ে গেছে। তাতে শেষ দিকে আমরা লড়াইও করেছি। কোনও সময় ম্যাচের হাল ছাড়িনি। তাই তো ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছাড়তে পেরেছি।

Loading...
,