মৃত্যুর ১৫ মাস পর সৌদি থেকে লাশ এলো প্রবাসীর, জানে না স্বজনরা
মৃত্যুর ১৫ মাস পর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছে কিশোরী শারমিন আক্তারের লাশ।
দীর্ঘ সময় সৌদির হাসপাতাল মর্গে ফ্রিজিং অবস্থায় থাকার পর শনিবার রাতে তার লাশ দেশে ফিরলেও জানা নেই তার পরিবারের। তাই ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই পরে আছে হতভাগী শারমিনের লাশ।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের এক কর্মকর্তা জানান, শারমিনের লাশ আসার পর তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। তার বাবা ইতোমধ্যে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
শারমিনের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে। তার বাবা শামসুল ইসলাম রোববার সন্ধার দিকে এই প্রতিবেদককে বলেন, মেয়ের লাশ আসবে তা আমাদের জানানো হয়নি। খবর পেয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। এখন বগুড়ায় আছি।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক ফখরুল আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, লাশ আসার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে এয়ারলাইন্সই খবর দিয়ে থাকে। গতকাল (শনিবার) রাতে শারমিনের লাশ আসার পর পরিবারের কেউ উপস্থিত না থাকায় আমরা শারমিনের পরিবারকে খবর দেই। তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
জানা যায়, একবুক স্বপ্ন নিয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বরে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন দিনাজপুরের শারমিন আক্তার। শারমিন আক্তার ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল সৌদি আরবে আত্মহত্যা করেছেন বলে তার মৃত্যু সনদে উল্লেখ রয়েছে। তবে, তার পরিবারের দাবি নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে শারমিনকে।
শারমিনের বাবা শামসুল বলেন, কোনোভাবেই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২৫ বছরের নিচে কোনো নারী গৃহকর্মী হিসেবে বিদেশ যেতে পারেন না। তাই ২০ বছরের কিশোরী শারমিন আক্তারকে ২৫ বছর দেখিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছে।
নিজ জেলা নারায়নগঞ্জ থেকে তার পাসপোর্ট তৈরি করা হয় বলে জানা গেছে। সংসারে সুখ আনতে সৌদি আরবে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে শারমিনকে। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদ থেকে ইস্যু করা এনওসিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৬ এপ্রিল দাম্মামের হাফার আল বাতেন এলাকায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন শারমিন। কিন্তু পরিবারের দাবি নির্যাতনের একপর্যায়ে হত্যা করা হয়েছে শারমিনকে।
ভুক্তভোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, ২০১৮ সনের নভেম্বর মাসে সৌদি যাওয়ার পর থেকেই নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয় শারমিনকে।
