যে কারণে মানুষ দুবাই থেকে সোনা গহনা কিনে অন্য দেশে বিক্রি করে

বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় সোনার দোকান বা বাজারের জন্য সুপরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই শহরটি। বর্তমানে দুবাই ভ্রমণে যাওয়া খুবই সহজ।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

আর এই কারণে অভিজাত এই শহরে কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে মানুষ কেন দুবাই থেকে সোনা, গহনা কিনে অন্য দেশে বিক্রি করে? আর এর পেছনে কারণই বা কি? এই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।

গেলে অনেকেই সোনা ও গহনা কিনে নিয়ে আসতে চান।বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে খালিজ টাইমস জানিয়েছে, ক্রেতারা ক্রমবর্ধমানভাবে দুবাইতে সোনা ও মূল্যবান ধাতুর গহনা কিনছেন এবং মূল্যবান এসব জিনিস অন্যান্য দেশে বিক্রি করছেন – বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে।

বিষয়টি নিয়ে শিল্পের নির্বাহীরা বলছেন, দুবাইতে বিক্রি হওয়া স্বর্ণ ও গহনার গুণমানের প্রতি আস্থা রাখার কারণে ক্রেতা ও ভোক্তারা এটি করে থাকেন। এছাড়া বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে দামের পার্থক্য থেকে ক্রেতারাও উপকৃত হয়ে থাকেন।

কাতারের সব খবর সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

অবশ্য বিশ্বের কিছু দেশ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের ওপরে স্বর্ণ এবং গহনা ক্রয়ের ওপর কর আরোপ করে থাকে। তবে দুবাইতে স্বর্ণের গহনা কেনার ওপর কোনও কর নেই।

যদি যাত্রীরা স্বর্ণ এবং গহনা বহন করার অনুমোদিত সীমা অতিক্রম করেন, তাহলেই কেবল কর্তৃপক্ষ সেগুলো বাজেয়াপ্ত করতে পারে। আবার এমন ক্ষেত্রে যাত্রীদের প্রতিটি দেশের নীতির ওপর নির্ভর করে শুল্ক দিতেও বলা হয়ে থাকে।

খালিজ টাইমস বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশ বা বের হয়ে যাওয়ার সময় দেশটির বাসিন্দা এবং দর্শনার্থীদের যারা ৬০ হাজার দিরহামের বেশি মূল্যের নগদ অর্থ, স্বর্ণ, গহনা, হীরা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র সাথে রাখেন, তাদের সেটি প্রকাশ করতে হবে।

খালিজ টাইমস বলছে, বুধবার দুবাইতে চব্বিশ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি গ্রাম ২৪৬.৫ দিরহামে (৫ হাজার ৫৭০ রুপিতে) বিক্রি হয়েছে।

সেই তুলনায় একইদিনে ভারতে চব্বিশ ক্যারেটের প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম ছিল ৬ হাজার ৩২৩ রুপি বা ২৮০ দিরহাম।

গত মাসে ভারত গহনা তৈরিতে ব্যবহৃত সোনা এবং রৌপ্যের আমদানি শুল্ক ১১ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছে, যাতে এগুলো সোনা এবং রৌপ্য বারগুলোর শুল্কের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

আর এর আগে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে মূল্যবান ধাতু ধারণকারী ব্যয়িত অনুঘটকের আমদানি শুল্ক ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ করে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়।

মূলত দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর বাসিন্দা এবং দর্শনার্থীরাই দুবাইতে সোনার গহনার সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

দুবাই জুয়েলারি গ্রুপের চেয়ারম্যান তাওহিদ আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘দুবাইয়ের গহনা তার সর্বোচ্চ মানের বেঞ্চমার্ক এবং সেরা দামের জন্য পরিচিত। আর ব্যবসার পরিমাণের ওপর ফোকাস করে থাকে দুবাইয়ের জুয়েলার্স।

বেশিরভাগ জুয়েলার্সের জন্য প্রতি গ্রাম মেকিং চার্জ স্থির করা থাকে এবং সেটি ভারতের মতো বাজারের তুলনায় অনেক কম। কারণ ভারতে মেকিং চার্জ সোনার দামের শতাংশে গণনা করা হয়। সোনার হারের ওঠানামা দুবাইতে গহনা তৈরির চার্জকে প্রভাবিত করে না।’

তিনি বলেন, ভারতে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে দেশটিতে গহনার দাম আরও বেড়েছে। তার ভাষায়, ‘দুবাই বিমানবন্দরে পর্যটকরা ভ্যাট ফেরত পেতে পারেন যা একটি বাড়তি সুবিধা। মোটকথা, দুবাই এখনও যেকোনও ধরনের গহনা কেনার জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী জায়গা।’

জয়লুক্কাস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জন পল আলুক্কাস বলেছেন, দুবাইয়ে স্বর্ণ ও গহনার বাজারে কঠোর মান নিশ্চিত করা এবং পণ্যের বিশ্বাসযোগ্যতাই বৈশ্বিক ক্রেতাদের এখান থেকে স্বর্ণ ও গহনা কিনতে আকৃষ্ট করে থাকে।

আরো পড়ুন-

ShareNews

Loading...
,