রিজার্ভ ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, সহসা বাড়ার সম্ভাবনাও নেই

বাংলাদেশে ক্রমাগতভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমার বিষয়টি ভবিষ্যতে ব্যাপক উদ্বেগের বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
তারা বলছেন যে, বর্তমানে দেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে করে হঠাৎ করেই রিজার্ভ ঘুরে দাঁড়াবে না। ফলে, সামনের মাসগুলিতে রিজার্ভ নিয়ে সংকটে পড়তে পারে সরকার।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে যেহেতু এটি এই মুহূর্তে একটি চলন্ত সূচক এবং এটি স্থির নয়। বরং এটির ক্রমাবনতি হচ্ছে এবং এর বাড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
তার মতে, আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার পরও আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য ঠিক রাখা যাচ্ছে না। আর রেমিটেন্সের প্রবাহও এখনো ঋণাত্মক। এর পাশাপাশি বৈদেশিক সাহায্যের প্রবাহ কম।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলছেন, আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে রিজার্ভ বাড়ার মতো কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
ফলে সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম বড় দুটি মাধ্যম হলো রেমিটেন্স এবং রপ্তানী আয়। এই দুই ক্ষেত্রে ডলারের প্রবাহ না বাড়লে ভবিষ্যতে সংকটে পড়ার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
রিজার্ভ আসলে কত?
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দায় পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ হয়েছে ৩১.১৯ বিলিয়ন ডলার।
বলা হচ্ছে যে, গত ছয় বছরের তুলনায় এটি সবচেয়ে কম পরিমাণ রিজার্ভ। জানুয়ারিতেও এর পরিমাণ ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের যে হিসাব দিচ্ছে তাতে ফাঁক রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে রিজার্ভের পরিমাণ আরো কম।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রিজার্ভ বলতে বোঝায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পরিমাণ কত সেটা।
তাই যে অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারের জন্য পাওয়া যায় না সেটি রিজার্ভের মোট হিসাব থেকে বাদ দেয়ার কথা বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থা আইএমএফ।
এর মধ্যে রয়েছে রপ্তানী উন্নয়ন তহবিল এবং উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে সরকারি বিনিয়োগ।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রপ্তানী উন্নয়ন তহবিলে ৭ বিলিয়ন বা সাতশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা রয়েছে।
সে হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ সরকারি হিসেবেই দাঁড়ায় ২৪ বিলিয়নে।
তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন এই পরিমাণ ২০-২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে না।
অর্থনীতিবদরা বলছেন, এই পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। এটি সমস্যার কারণ হবে না যদি বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ ভাল থাকে।
আর তা না হলে রিজার্ভের পরিমাণ না বাড়লে তা নিয়ে সরকার সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রিজার্ভ থেকে ২০২২ সালে ১২.৬১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন
BBC
