যে কারণে ১৩ প্রবাসীকে ফেরত পাঠালো কুয়েত এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন

সময় মতো না পৌঁছানোর কারণে কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩ শ্রমিককে ফিরতি ফ্লাইটে ফেরত পাঠিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ।
কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
ফেরত আসা এসব শ্রমিকের প্রত্যকের কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েছিল বনানীর অরবিট কনসালট্যান্ট নামক রিক্রুটিং এজেন্সি দেশে ফেরার আগে শ্রমিকরা এমন অভিযোগ করেন।
কুয়েত থেকে জালাল উদ্দিন নামের একজন প্রবাসী জানান, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিমানবন্দর থেকে ১৩ জন প্রবাসী বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠাচ্ছে কুয়েত সিভিল এভিয়েশন। বৃহস্পতিবার রাতে কুয়েত এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন পুলিশ স্থানীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাতের (কুয়েত সময়) একটি ফ্লাইটে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন
কুয়েতের আল ফয়সাল নামক কোম্পানির ভিসায় এসব শ্রমিক কুয়েতের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন; কিন্তু কুয়েতে বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাদের ভিসার মেয়াদ ছিল তিন মাস।
বিমানবন্দরের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ২২ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুয়েতের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এই ফ্লাইটে নতুন ভিসাধারী ১৩ জন যাত্রী ছিলেন।
ফ্লাইটটির কুয়েতে পৌঁছানোর নির্ধারিত সময় ছিল ২২ জুন রাত ১০টা ৫০ মিনিটে; কিন্তু ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ের ৫২ মিনিট পরে কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ফ্লাইট থেকে যাত্রীরা ইমিগ্রেশন পর্যন্ত পৌঁছাতে রাত ১২টা পেরিয়ে যাওয়ায় তাদের সবার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, যার কারণে কুয়েত বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ ১৩ জন বাংলাদেশীকে কুয়েতে প্রবেশ করতে দেয়নি।
যাত্রীদের অভিযোগ- তাদের ভিসার মেয়াদ যে দিন শেষ হবে ঠিক সেই রাতেই ফ্লাইটে তাদের কুয়েতে পাঠানো হয়েছে।
এর দায় সম্পূর্ণ রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিতে হবে। তাদের গাফিলতির কারণে কুয়েতে প্রবেশ করতে পারেননি তারা।
তারা আরো অভিযোগ করেন, বিএমইটি থেকে ক্লিয়ারেন্স পেতে দেরি হওয়ায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিলম্বে ছেড়ে যায়। আর মাত্র ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে আমাদের বিমানের টিকিট করে দেয় রিক্রুটিং এজেন্সি।
সাত থেকে আট লাখ টাকা খরচ করে আমরা কুয়েতের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছি। আমাদের এই ক্ষতিপূরণ তাদের অবশ্যই বহন করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রবাসী জানান, যে দিন ভিসার মেয়াদ শেষ সেই দিন এসেছি আমরা। এর দায় সম্পূর্ণ ট্রাভেল এজেন্সির। শুধু টিকিটের দাম একটু কম পাওয়ার আশায় এতগুলো মানুষের জীবন নষ্ট করেছে।
ভুক্তভোগীদের একজন আজিজুল মিয়া বলেন, ১৯ জুন আমার ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসছে ১৯ জুন। চার দিন আমি ঢাকায় থাকার পর ২২ তারিখ ফ্লাইট দিয়েছে।
এজেন্সি থেকে ওই দিন আমাকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় টিকিট দেয়, সেখান থেকে দ্রুত মোটরসাইকেলে বিমানবন্দরে পৌঁছায়। আমাকে ইমিগ্রেশন কার্ড দেয়ার কথা এজেন্সি থেকে, সেটি তারা করেনি। যার কারণে বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন পুলিশ আমাকে আটকে দেয়।
তিনি বলেন, পরে এজেন্সি থেকে কার্ড দিয়ে যায়, যার কারণে ফ্লাইট এক ঘণ্টা আমাদের জন্য পিছিয়ে যায়। কুয়েতে বিমান থেকে নামতে নামতে রাত ১২টার বেশি হয়ে যায়।
যার কারণে সেটি ২২ জুন থেকে ২৩ জুন হয়ে যাওয়ায় আমাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে কুয়েত ইমিগ্রেশন পুলিশ আমাদের আটক করে রাখে।
বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তা (শ্রম) আবুল হোসেন জানান, খবরটি জানার পর দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোম্পানির মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হয়। মালিক নিজে গিয়ে চেষ্টা করলে তাদের হয়তো কুয়েতে প্রবেশ করানো সম্ভব হবে।
গতকাল শনিবার রাতে রিক্রুটিং এজেন্সি অরবিট কনসালট্যান্টের অফিসে অভিযাগের সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হয়। তবে দায়িত্বিবশীল কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আরো পড়ুন
NayaDiganta
