১৯ দিনে এলো ১২৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১২৩ কোটি ৭১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
গত জুলাই মাসের পুরো সময় জুড়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার। আর ২০২০ সালের আগস্ট মাসের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।
গত অর্থবছরে প্রতি মাসে গড়ে ২০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। সেই তুলনায় গত জুলাই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমতির দিকে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের ধারণা, আগামীতে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে আসবে। এ কারণে তারা ডলারের ব্যবসায় আবারও মনোযোগী হয়ে উঠছেন। ফলে ডলারের বিনিময় হারও একটু একটু করে বাড়ছে।
চলতি আগস্ট মাসের প্রথম কর্মদিবস (২ আগস্ট) থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ২০ পয়সা। গতকাল আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ৮৫ দশমিক ০৫ টাকা এবং বিক্রয়মূল্য ছিল ৮৫ দশমিক ১০ টাকা।
অবশ্য রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসেন।
এরপরও যখন রেমিট্যান্স উচ্চহারে বাড়তে থাকে, তখন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, এ প্রবৃদ্ধি প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নয়। অনেক প্রবাসীকর্মী চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। যেকোনো সময় চাকরি চলে গেলে যাতে দেশে সব সঞ্চয় পাঠিয়ে দিতে পারেন এজন্য তারা ঘটিবাটি বিক্রি করে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে কভিড পরিস্থিতিতে ২ লাখ ১৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরত আসেন। তাছাড়া গত বছর জুলাই পর্যন্ত বিশ্বের ১৮৬টি দেশে অবস্থানরত ৭০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী করোনায় আক্রান্ত হন।
ডিসেম্বর পর্যন্ত মারা যান ২ হাজার ৩৩০ জন। তবে এত কিছুর পরও গত বছর রেমিট্যান্স কমে যাওয়া নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস করেছিল তা ঠিক বিপরীত ঘটে। বিশ্বব্যাংক বলেছিল, বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ২০ শতাংশ কমবে।
অথচ ২০২০ সালে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ছিল ১৮.৪ শতাংশ। এবার পূর্বাভাস বদলেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি ২০২১ এবং আগামী ২০২২ সালেও বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ১৭০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্স ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এ প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ প্রণোদনা যোগ করে ৩ শতাংশ প্রণোদনা দেয় কোনো কোনো ব্যাংক। এর ফলে কভিড সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বাড়তে থাকে। বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার।
