পাঁচ দিনের কাতার সফর নিয়ে যা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

কাতারে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কাতারে এলডিসি ৫ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

শেখ হাসিনা বলেন, এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘From Potential to Prosperity’।

এর আগে ২০০১ সালে আমি ব্রাসেলসে তৃতীয় এলডিসি সম্মেলন এবং ২০১১ সালে ইস্তাম্বুলে চতুর্থ এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলাম।

জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই সম্ভবত বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ, ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবো।

এই সম্মেলনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমি বাংলাদেশের অভাবনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরি।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

একইসঙ্গে, আমি ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে আমাদের বিভিন্ন দাবি ও প্রত্যাশার কথা উত্থাপন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, “LDC graduation should be rewarded, not punished”।

আমি আমার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলেছি যে স্বল্পোন্নত দেশগুলো করুণা বা দাক্ষিণ্য চায় না, বরং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য পাওনা চায়।

আমি কোভিড অতিমারি ও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য গৃহীত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানাই।

এক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের বিশেষ প্রয়োজনের কথা তুলে ধরি।

এছাড়া, বাংলাদেশসহ উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর উন্নয়ন অর্জনকে গতিশীল রাখতে বর্ধিত সময়ের জন্য এলডিসিদের জন্য প্রযোজ্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, ৫ মার্চ দুপুরে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে থাকা তিন এশীয় দেশ বাংলাদেশ, নেপাল ও লাও পিডিআর- আয়োজিত ‘Sustainable and Smooth Transition for the Graduating Cohort of 2021’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে আমি অংশগ্রহণ করি।

এই অধিবেশনে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ, লাও পিডিআর-এর উপপ্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ ESCAP-এর নির্বাহী সচিব বক্তব্য প্রদান করেন।

আমি বাংলাদেশের উত্তরণযাত্রা ত্বরান্বিত করতে আমাদের সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি উত্তরণমুখী দেশগুলোর পক্ষে পাঁচ দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করি।

এ অনুষ্ঠানের শেষে তিন দেশের সমন্বিত দাবি সংবলিত একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়।

ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডের ‍বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬ মার্চ সকালে আমি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘The Rise of Bengal Tiger: Potentials of Trade & Investment in Bangladesh’ শীর্ষক বিজনেস সামিটে অংশগ্রহণ করি।

এই অনুষ্ঠানে কাতারের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

আমি বাংলাদেশ ও কাতারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পারস্পরিক লাভজনক অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানাই।

এ প্রসঙ্গে আমি দুই দেশের সরকারের মধ্যে একটি যৌথ ব্যবসা ও বিনিয়োগ কমিটি এবং দুই দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের সমন্বয়ে একটি যৌথ বিজনেস ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করি।

এছাড়া, আমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সামুদ্রিক গ্যাস অনুসন্ধান, জ্বালানি সঞ্চালন ব্যবস্থা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পর্যটন, স্টার্টআপসহ বিভিন্ন খাতে কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই।

আরো পড়ুন

Jugantor

Loading...
,