রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধ করার পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। আকুর দেনা বাবদ পরিশোধ করা হয় ১০৬ কোটি ডলার।

এতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার (৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার) থেকে কমে ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে (৩ হাজার ১০০ কোটি ডলারে) নেমে এসেছে।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

এরপর রিজার্ভ সামান্য পরিমাণে ওঠানামা করছে। এদিকে ২রা ফেব্রুয়ারি আইএমএফ’র ঋণের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে রিজার্ভ সামান্য বেড়েছিল।

পরে আবার কমে গেছে। গত বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১০৬ কোটি ডলার। এর আগে ২৮শে ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ২৩৩ কোটি ডলার।

আকুর দেনা বাবদ পরিশোধ করা হয় ১০৬ কোটি ডলার।

এ হিসাব অনুযায়ী এক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ১২৭ কোটি ডলার। আর মোট রিজার্ভ কমে ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে। এরমধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২ হাজার ৪০৬ কোটি ডলার।

সূত্র জানায়, রিজার্ভ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপকভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার নীতি অব্যাহত রেখেছে। ফলে গড়ে আমদানি কমেছে। তবে রোজার পণ্য আমদানিতে ডলারের জোগান বাড়াতে হয়েছে।

কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

এতে করে মার্চে আমদানি কিছুটা বাড়বে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ও নিম্নমুখী। নভেম্বর থেকে রপ্তানি আয় কমছে। এর আগে প্রতি মাসে ৫০০ কোটি ডলারের উপরে উঠেছিল রপ্তানি আয়।

এখন আবার তা নিচে নেমে এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে এ খাতে আয় হয়েছে ৪৬৩ কোটি ডলার। এ ছাড়া গড় হিসাবে রেমিট্যান্স বাড়লেও গত কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্সও কমছে।

আগে প্রতিমাসে রেমিট্যান্স আসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি। ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ১৫৬ কোটি ডলার। তবে আশা করা হচ্ছে, রোজা ও ঈদের কারণে চলতি মাস থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।

কারণ প্রবাসীরা রোজা ও ঈদের সময় দেশে আত্মীয়স্বজনের কাছে বাড়তি খরচ মেটাতে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন। অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এদিকে রপ্তানির অর্ডার কমে গেছে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক মন্দার কারণে রপ্তানি আয়ও দেশে আসার প্রবণতা কমছে।

এ খাতে শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও কমেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামীতে রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত রপ্তানি আয়।

এটি কমে গেলে রিজার্ভের ওপর আরও চাপ বেড়ে যাবে। সূত্র জানায়, জানুয়ারি-জুন সময়ের মুদ্রানীতিতে ৩০শে জুনের মধ্যে রিজার্ভ ৩ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আপাতদৃষ্টিতে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, চলতি অর্থবছরে রিজার্ভ আরও নিম্নমুখী হবে। জুনে গ্রস রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ৩ হাজার কোটি ডলার।

নিট রিজার্ভ আরও কম হবে। তখন ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ কমে দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুনে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ১৮৩ কোটি ডলার।

গত বছরের ২৯শে মার্চ ছিল ৪ হাজার ৪৩৪ কোটি ডলার।

এক বছরের হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ৩২৮ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করার পরও রিজার্ভ কমেছে বৈদেশিক ঋণ ও অন্যান্য বকেয়া দেনা পরিশোধের কারণে। সামনে এই চাপ আরও কিছুটা বাড়তে পারে। কেননা, স্বল্পমেয়াদি আরও ঋণ চলতি বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

আরো পড়ুন

মানবজমিন

Loading...
,