সপ্তাহে কিস্তি ৭ লাখ টাকা, ‘আ-ত্ম-হ-ত্যা’ করলেন মুরগি ব্যবসায়ী

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে নাদির হোসেন নাদু (৫২) নামে এক মুরগি ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের ওয়াসক ভূঁইয়া বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

নিহত নাদির ওই বাড়ির মৃত দলিলুর রহমানের ছেলে। এক ছেলে দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে তার। বড় ছেলে বিদেশে থাকেন, দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয় মিঠাছরা বাজারের পাশে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। মিঠাছরা বাজারে রিফাত পোল্ট্রি ফার্ম ও রুমা ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে তার দুটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সংবাদ পেয়ে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় নাদির কাকা আমাকে মোবাইলে কল করে জানান, তিনি বাড়িতে আসছেন।

আমি যেন আধা ঘণ্টা পর কাউকে কিছু না জানিয়ে তার ঘরে গিয়ে দেখা করি। আমি আধাঘণ্টা পর ওনার বাড়িতে গিয়ে দেখি, ঘরের দরজা বন্ধ।

পরে দরজা খুলে একাধিকবার ডেকেও কোনও সাড়া না পেয়ে রুমের ভেতর প্রবেশ করি। এ সময় দেখি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন। আমি ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করি।

কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

এ সময় বাড়ির অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসেন এবং জোরারগঞ্জ থানায় খবর দিই। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

এ সময় তার লিখিত একটি চিরকুট তালা চাপ দেওয়া অবস্থায় ছিল। আত্মহত্যার আগে তিনি নিজের জন্য কাফনের কাপড় ও স্ত্রীর জন্য সাদা কাপড় কিনে পাশে রেখে দেন।’

চিরকুটে লেখা ছিল, ‘মোশাররফ তুমি রুমা এবং রুমার জামাইকে পরিচয় দিও না। আর আমি তুমি ছাড়া কেউ যেন না জানে। জানলে দুই বাড়ির মানসম্মান নষ্ট হবে।

পুলিশ আসবে। এনজিও ব্যাংকগুলো টাকার জন্য চাপ দেবে। তুমি চিঠি পড়ে গলার রশিটা ছুরি দিয়ে কেটে আমাকে উত্তর দক্ষিণে শোয়ায় দিয়ে চলে যাবে।

রুমাকে ফোন করে তোমার বাবা তোমাদের পুরান বাড়ির ঘরে অসুস্থ তোমার মাকে নিয়ে সিএনজি করে চলে আসো। আমি কে এটা বলবে না মেয়েকে।

ছুরি এবং রশি কেউ যেন না পায় সে মোতাবেক ফেলে দিও। তোমার জন্য ১০০০ টাকা রেখে গেলাম। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।

আমার ৮০ লাখ টাকা এনজিও ঋণ রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে সাত লাখ টাকা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়।’

জোরারগঞ্জ থানার এসআই রতন দে বলেন, ‘ব্যবসায়ী নাদির হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সুরতহালে এটি আত্মহত্যা বলে উঠে এসেছে। ব্যাংক ও এনজিও ঋণের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:

গালফ বাংলা

Loading...
,