খাওয়ার সময় ফলের ওপর লবণ ছিটালে কী হয়?

Loading...

খাওয়ার সময় ফলের ওপর লবণ ছিটালে কী হয়?

পুষ্টিকর খাবার ফল আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার সরবরাহ করে। তবে অনেকেই খাওয়ার সময় ফলের ওপর লবণ ছিটিয়ে খান।

কিছু মানুষের মতে, এই অভ্যাসে স্বাদ বাড়ে এবং হজমে সাহায্য হয়। কিন্তু এই অভ্যাসের কিছু উপকারিতা এবং অপকারিতাও রয়েছে।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

চলুন ফলের ওপর লবণ ছিটিয়ে খাওয়ার সুবিধা এবং ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

ফলের ওপর লবণ ছিটিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

স্বাদ বৃদ্ধি: অনেক ফল, যেমন আম, শসা, পেঁপে, পেয়ারা, খিরা ইত্যাদি লবণ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস প্রচলিত। লবণ ফলের স্বাদকে আরো তাজা ও মজাদার করে তোলে। ফলে খাওয়ার আনন্দ বাড়ায়। লবণ ফলের মিষ্টতা বা টকভাবকে ভারসাম্য আনে, ফলে স্বাদ আরো মধুর অনুভূত হয়।

Loading...

হজমে সহায়ক: বিশেষজ্ঞদের মতে, লবণ হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। ফলের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত ফাইবার শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। আর লবণের সঙ্গে কাজ করে পেটের অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ফলে, যারা হজমের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য এটি সহায়ক হতে পারে।

শরীরের পানির ভারসাম্য: গরম আবহাওয়ায় বা শরীরের অতিরিক্ত কার্যকলাপের সময় শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায়। লবণ শরীরের পানি শোষণের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ফলে শরীর দ্রুত হাইড্রেটেড থাকে এবং পানির ভারসাম্য বজায় থাকে। বিশেষ করে শরীরের ঘাম নিঃসরণের পর লবণ শরীরকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ও মিনারেল শোষণ: ফল প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার সমৃদ্ধ, যা শরীরের শক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ কিছু ফল যেমন পেঁপে, পেয়ারা, আম ইত্যাদি ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ।

কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

অনেকে মনে করেন, লবণ ফলের ভিটামিন শোষণকে আরো কার্যকর করতে সাহায্য করে। বিশেষত কিছু ধরনের ফলের মধ্যে লবণ খাওয়ার অভ্যাস শরীরের পুষ্টির উপকারিতা বাড়ায়। ফলের ওপর লবণ ছিটিয়ে খাওয়ার অপকারিতা

Loading...

পুষ্টির ঘাটতি: যদিও ফল অত্যন্ত পুষ্টিকর, কিন্তু লবণ তার পুষ্টিগুণের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে ফলের মধ্যে উপস্থিত ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো লবণের উপস্থিতিতে তাদের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।

অতিরিক্ত লবণ ফলের স্বাদকে বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু এর ফলে ফলের ভিটামিন সি’র পরিমাণ কমে যায়, যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।

কিডনির ওপর চাপ: অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে কিডনির ওপর চাপ পড়তে পারে। লবণ শরীরে পানি শোষণের প্রক্রিয়া বাড়ায়, যা শরীরের পানির ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে।

Loading...

অতিরিক্ত লবণ কিডনির কার্যকারিতা কমাতে পারে এবং দীর্ঘসময় ধরে এটি কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিডনি কম কার্যকরী হলে শরীর ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত লবণের কারণে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, যা কিডনির কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে।

হাইপারটেনশনের সমস্যা: অতিরিক্ত লবণ খাওয়া দীর্ঘমেয়াদীভাবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। লবণ শরীরের সোডিয়াম লেভেল বাড়িয়ে দেয়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি করে।

বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য লবণ অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি রক্তচাপের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।

Loading...

হজমে সমস্যা: অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে পেটের অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

ফলে, সঠিকভাবে পুষ্টি উপাদানগুলো শোষিত হতে পারে না এবং হজমের সমস্যা বাড়তে পারে। অনেকে মনে করেন, লবণ শরীরের শোষণের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান পায় না।

ফল নিজস্ব গুণ হারাতে পারে: ফলগুলোর প্রাকৃতিক গুণাগুণ, যেমন তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও ভিটামিনগুলো শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

Loading...

কিন্তু লবণ ফলের প্রাকৃতিক গুণগুলিকে কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে পেঁপে, আম, পেয়ারা ও শসার মতো ফলগুলো প্রাকৃতিকভাবে উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন থাকে, কিন্তু লবণ এগুলোর পুষ্টিগুণ কমিয়ে দিতে পারে।

ফলের ওপর লবণ ছিটিয়ে খাওয়ার অভ্যাসে কিছু উপকারিতা যেমন স্বাদ বৃদ্ধি এবং হজমে সহায়তা রয়েছে। তবে এর অপকারিতা এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও রয়েছে। অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে পুষ্টির ঘাটতি, কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও হজমের সমস্যা হতে পারে।

Loading...

সুতরাং এই অভ্যাসে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ফল খাওয়ার সময় তার প্রাকৃতিক স্বাদ উপভোগ করতে এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি লাভ করতে, পরিমিত লবণ ব্যবহার করা উচিত অথবা তা পরিহার করাই ভালো।

কালের কণ্ঠ

Loading...

Loading