সৌদিতে নারীকর্মী যাওয়া কমলেও অন্যান্য দেশে বাড়ছে
Loading...

সৌদিতে নারীকর্মী যাওয়া কমলেও অন্যান্য দেশে বাড়ছে
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব, কাতার, কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি পাঠানোর হার সাম্প্রতিক সময়ে কমেছে। এর দেশগুলোতে পুরুষ শ্রমিক যাওয়ার হার কমার সাথে সাথে নারী শ্রমিক যাওয়ার হারও কমছে। তবে কোনো কোনো দেশে নারী শ্রমিক যাওয়া আবার বাড়ছেও।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সৌদি আরবে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন সাড়ে চার হাজার নারীকর্মী। কিন্তু এক মাসের ব্যবধানে ওই দেশটিতে শ্রমিক কম গিয়েছে এক হাজারেরও বেশি। যদিও বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দুবাইয়ে আবার নারী শ্রমিক যাওয়ার হার জানুয়ারি মাসের তুলনায় বেড়েছে। শুধু দুবাই নয়, কুয়েত, জর্দানসহ কয়েকটি দেশে নারী শ্রমিক যাওয়া বাড়ছে।
কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর
Loading...
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস মিলিয়ে সৌদি আরব, দুবাই, কুয়েত, কাতার, জর্দান, লিবিয়া, ইউকে, সিঙ্গাপুর, ইতালিসহ শ্রমবান্ধব দেশগুলোতে মোট ১০ হাজার ৩৬১ জন নারী শ্রমিক গেছেন।
এর মধ্য জানুয়ারি মাসে ৫ হাজার ৮৫৮ জন গেলেও ফেব্রুয়ারি মাসে সেটি কমে ৪ হাজার ৫০৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেশভিত্তিক নারীকর্মী যাওয়ার চিত্র থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে জানুয়ারি মাসে কর্মী গিয়েছিল ৪ হাজার ৬৩৯ জন। এক মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটিতে কর্মী গিয়েছে তিন হাজার ৩৪১ জন।
কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন
Loading...
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে জানুয়ারি মাসে মাত্র চারজন কর্মী গেলেও ফেব্রুয়ারি মাসে তা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে জানুয়ারি মাসে কুয়েতে ৫৬ জন গেলেও ফেব্রুয়ারি মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯ জনে।
অবশ্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের চিত্র ব্যতিক্রম। জানুয়ারি মাসে ২৬৩ জন গেলেও ফেব্রুয়ারিতে সেটি কমে ১৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপের দেশসহ অন্যান্য দেশে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে জানুয়ারি মাসে ৩৭ জন গেলেও সেটি ফেব্রুয়ারি মাসে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৯ জনে।
খাঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরুষকর্মীদের বহির্গমন ছাড়পত্র অনলাইন এবং অফলাইনে হলেও মহিলা কর্মীদের বহির্গমন ছাড়পত্র শতভাগ অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। নারীকর্মীদের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের অভিযোগ আসার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ শতভাগ অনলাইনে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে হয়রানির অভিযোগের সংখ্যা কিছুটা কমেছে।
Loading...
গতকাল রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান নয়া দিগন্তকে এ প্রসঙ্গে বলেন, আসলে সৌদি আরবে নারীকর্মী এক হাজার কম গেছে এটা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা না। আমি যতটুকু জানি, সৌদি আরবে রামাদান উপলক্ষ ইমিগ্রেশন বিভাগে ভিসা প্রসেসিংয়ে বিলম্ব হচ্ছে।
অনেক সময় সার্ভারে প্রবলেমের কারণে দেরি হয়ে থাকে। এসব কারণে শ্রমিক কম যেতেই পারে। দুবাইতে পুরুষ কর্মী যাওয়া বন্ধ থাকলেও মহিলা শ্রমিক যেতে কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমাদেরকে দেখতে হবে, বছর শেষে শ্রমিক যাওয়ার হার কমেছে নাকি বেড়েছে?
তিনি বলেন, আমাদের নারীকর্মী হোক আর পুরুষর্মী হোক, আগে দেখতে হবে কর্মী পাঠানোর চেয়ে তাদের নিরাপত্তা কতটুকু দিতে পারছি? একই সাথে দক্ষ কর্মী পাঠাতে পারছি কি না? এই দুটো দিক ঠিক থাকলে বিদেশ গিয়ে আমাদের শ্রমিকরা রেমিটেন্স বেশি পাঠাবেন।
Loading...
তিনি বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে বিদেশে বাসা বাড়ির কাজে নারী কর্মী না পাঠিয়ে কিভাবে দক্ষ কর্মী গড়ে তাদের পাঠানো যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। এই মুহূর্তে বিদেশে কেয়ার গিভার, মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট পদে কর্মীদের চাহিদা রয়েছে অনেক। এসব পদে কর্মী পাঠাতে পারলে সংখ্যায় কম গেলেও তারা ভালো বেতন পাবেন ভালো থাকবেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এসব সমস্যা নিয়ে বায়রার প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রণালয় এবং বিএমইটিতে কথা বলতে হলে যোগ্য প্রতিনিধি লাগবে। কিন্তু বায়রায় দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি নাই। যার কারণে ২২০০ এজেন্সির পক্ষে মন্ত্রণালয়ে কথা বলার মতো কোনো প্ল্যাটফরম নাই। তাই দ্রুত সম্ভব বায়রায় সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন অভিবাসন বিশ্লেষক ও সাবেক এই মহাসচিব।
আরও খবর
Loading...
