দক্ষ শ্রমিক চায় আরব আমিরাত: প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার আমাদের কাছে দক্ষ শ্রমিক চায়। আমরাও দক্ষ শ্রমিক দিতে আগ্রহী।
কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর
বিশেষ করে আমাদের কাছে যেসব দক্ষতা সম্পন্ন ডাক্তার, নার্স, প্রকৌশলী, ড্রাইভার, নির্মাণ শ্রমিক আছে, এসব শ্রমিক নিতে বলেছি। সে ক্ষেত্রে তারা শিক্ষাগত সনদ ও দক্ষতা সনদের ওপরেই গুরুত্ব দিচ্ছে।
রবিবার দুবাইয়ে চলমান সপ্তম আবুধাবি ডায়ালগে প্লেনারী সেশনে বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
দেশের ১১০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ যুক্তরাজ্য, কোরিয়া, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভায় গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের যেসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে, সেখান থেকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
কাতারের সব খবর সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রয়োজনে এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে তিন থেকে দশটি সেন্টার তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেখানে তারা দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে নিতে পারবে। এসব বিষয়ে আমাদের টিম কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আবুধাবি ডায়ালগে আসার পর অনেকটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমাদের এখন মূল লক্ষ্য দক্ষ শ্রমিক বিদেশে প্রেরণ করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। যে সকল দেশ শ্রমিক নিবে তারা এই বিষয়টি অবগত করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদেরকে আমরা বাংলাদেশে যেতে দাওয়াত দিয়েছি। তারা দাওয়াত গ্রহণ করেছে। কিছুদিনের মধ্যে তারা তারিখ জানাবে। সেই অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের মাধ্যমে আমরা কাজ করে যাবো।
মন্ত্রী পর্যায়ের পরামর্শ সভায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও আমিরাত সংক্রান্ত মন্ত্রী ডা. আব্দুর রহমান আল আওয়ার নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়ে মূল বক্তব্য প্রদান করেন।
আবুধাবি সংলাপের বর্তমান সদস্যভুক্ত ১৬টি দেশ অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম মিলে নয়টি শ্রম প্রেরণকারী দেশ রয়েছে।
এছাড়া সাতটি শ্রমিক গ্রহীতা দেশের মধ্যে সংলাপে অংশ নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া।
এতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর শ্রম, মানবসম্পদ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রীরা যোগ দেন।
এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি খাত ও বেসামরিক প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। এ সময় শ্রমিক গ্রহীতা দেশগুলো শ্রমিকদের দক্ষতার বৃদ্ধির বিষয়ে অধিকতর গুরুত্ব দেন।
একইদিন সকালে দুবাইয়ের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সৌদি আরবের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আহমাদ বিন সুলাইমান আলরাজি ও বিকাল তিনটায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডা. আব্দুর রহমান আল আওয়ার এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর জানান, আবুধাবি ডায়ালগে গত দুই দিনের আলোচনা শেষে একটি খসড়া প্রকাশ করা হচ্ছে। শ্রমিক প্রেরণকারী দেশ ও শ্রমিক গ্রহণকারী দেশগুলোর অংশগ্রহণে আলোচনার মাধ্যমে এই খসড়া তৈরি করা হয়।
এই খসড়া মাধ্যমে আগামী বছরগুলোতে আবুধাবি ডায়ালগে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার ও নতুন যেসব খাতে দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক দরকার যেমন- হেলথ কেয়ার প্রফেশনাল, গ্রিন জব, নবায়ন যোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে যে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো ও আইটি সেক্টরের মতো খাতে দক্ষতা বাড়ানোর মতো বিষয়গুলো কিভাবে সহজ করা যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এর ভিত্তিতে আগামী দুই মাস পর ডিক্লারেশন বের হবে। যেখানে শ্রমিক প্রেরণকারী দেশগুলো কিভাবে কাজ করবে, তাদের দক্ষ শ্রমিক প্রস্তুত, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা কি হবে এবং প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে শ্রমিক সরবরাহের বিষয়টি ঠিক করা হবে। এটির ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক শ্রমিক পাঠানো যে চুক্তিগুলোর রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সৌদি আরব ও ইউএই’র মানবসম্পদ মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের যেসব শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করছে তাদের কর্মদক্ষমতা ও বিভিন্ন গুণাবলীর প্রশংসা করেছে।
তারা সবসময় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। সামনের দিনগুলোতে দক্ষ শ্রমিক তৈরির ব্যাপারে সৌদি আরব তাগিদ দিয়েছে।
আরো পড়ুন-
DhakaTimes