কবে চালু হচ্ছে নতুন থার্ড টার্মিনাল?
Loading...
থার্ড টার্মিনাল চালু হতে লাগবে আরো এক বছর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কাজ অসম্পন্ন রেখেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন (টার্মিনাল-৩) উদ্বোধন করেছিল তৎকালীন সরকার।
সেই ‘সফট লঞ্চিং’-য়ের এক বছর পার হলেও অবশিষ্ট কাজগুলো শেষ করতে পারেনি নির্মাণকারী সংস্থা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অসমাপ্ত কাজ শেষ করে টার্মিনাল-৩ চালু করতে সময় লেগে যাবে আরো এক বছরের মতো।
কাতারের সব আপডেট পেতে জয়েন করুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে
Loading...
বেবিচকের তথ্য বলছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টার্মিনাল-৩-এর নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ। অবকাঠামো নির্মাণের কাজগুলো শেষ হয়েছে।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সিংহভাগই স্থাপন করা হয়েছে। অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির কিছু ‘ফাইন টিউনিং’ কাজ বাকি। টার্মিনাল পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজগুলোও বাকি।
সেই সঙ্গে টার্মিনাল-৩ পরিচালনা ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কারা করবে, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বেবিচক কর্মকর্তারা।
Loading...
তড়িঘড়ি করে গত বছরের ৭ অক্টোবর যখন সফট লঞ্চিং হয়েছিল, তখন টার্মিনাল-৩-এর ভৌতকাজের অগ্রগতি ছিল ৯০ শতাংশ। ফলে ১০ শতাংশ কাজ বাকি রেখে টার্মিনালটির উদ্বোধন কতটা যৌক্তিক ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তখনই।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আকাশ পরিবহন বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘টার্মিনাল ভবনটির সফট লঞ্চিং পুরোপুরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। লঞ্চিং অনুষ্ঠানের জন্য খরচও করা হয়েছে। এ সফট লঞ্চিং কতটুকু প্রয়োজন ছিল, সেটা চিন্তার বিষয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন ছোট ছোট কিছু কাজ বাকি রয়ে গেছে, যে কাজগুলো খুবই সূক্ষ্ম ও জরুরি। সঠিক পরিকল্পনা এবং যথাযথ বাস্তবায়ন না হলে এসব কাজে ধীরগতি হবেই।
Loading...
পরিকল্পিতভাবে না এগোলে দেখা যাবে ১ শতাংশ কাজই অনেক বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সবকিছু হয়ে যাওয়ার পর টেকওভার, হ্যান্ডলিংয়ের মতো বিষয় আছে। এসব দায়িত্ব কাকে দেয়া হবে, কীভাবে দেয়া হবে সে পরিকল্পনাও করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
টার্মিনাল পরিচালনার জন্য যে লোকজন আসবে, তাদের মধ্যে সবাই তো আর বিদেশী থাকবে না। স্থানীয়ভাবে একসঙ্গে এত প্রশিক্ষিত জনবলও পাওয়া সম্ভব নয়। তাই এখানে জনবল প্রশিক্ষণের একটা ব্যাপার আছে। আবার জনবল ও যন্ত্রপাতি সমন্বয়েরও একটা ব্যাপার আছে।
কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে দেখুন চাকরির খবর
Loading...
এসবের জন্য সময় দিতেই হবে। থার্ড টার্মিনাল অনেক সুন্দর একটি অবকাঠামো হয়েছে, আমরা চাই এটা সুন্দরভাবে চালু হোক। বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা নিয়ে আমাদের বেশ দুর্নাম রয়েছে। থার্ড টার্মিনালের মাধ্যমে সে দুর্নাম থেকে বেরিয়ে আসার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
থার্ড টার্মিনাল পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে বেবিচক। নিয়োগকৃত কর্মীদের ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তরা।
Loading...
তারা বলছেন, টার্মিনালের নিরাপত্তা, আকাশসীমার নিরাপত্তা, কাস্টমস, ইমিগ্রেশনের মতো কাজগুলো বেবিচকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
অন্যদিকে বিমানবন্দরের সার্বিক ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ বিমানবন্দরে একজন যাত্রী প্রবেশের পর থেকে বিমানে ওঠা পর্যন্ত যেসব সুবিধাদি লাগে,
ট্রলি থেকে আরম্ভ করে চেক-ইন করানো, ইমিগ্রেশনে নিয়ে যাওয়া, ইমিগ্রেশন থেকে বোর্ডিং করানো এবং পুরো বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনার কাজগুলোর জন্য গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং প্রতিষ্ঠান নিযুক্ত করা হবে।
Loading...
শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের অবশিষ্ট কাজ বাস্তবায়নের সমান্তরালে টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলোও এগিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া।
বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘টার্মিনাল-৩-এর কাজ চলতি মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ মুহূর্তে এটা সম্ভব হচ্ছে না। এখানে ১ দশমিক ৬ শতাংশের মতো কাজ বাকি রয়েছে। অবশিষ্ট কাজ আগামী বছরের মার্চ বা তার আগে শেষ হয়ে যেতে পারে।
আর আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বা তার একটু পরে টার্মিনালটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হতে পারে। আমরা ভৌতকাজগুলোর পাশাপাশি টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলোও এগিয়ে নিচ্ছি।’
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘কারা কাজ পাবে, সেটা সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
Loading...
এ-সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে গত সপ্তাহে একটি বৈঠক হয়েছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং অপারেটরের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রথম পর্যায়’ প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে তোলা হচ্ছে টার্মিনাল-৩। ২০১৭ সালের অক্টোবরে অনুমোদিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ২১ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা।
এরই মধ্যে প্রকল্পটির ব্যয় সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক। সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন হলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ২২ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকায়। সিংহভাগ অর্থ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)।
Loading...
২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের টার্মিনালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিতা করপোরেশন এবং কোরিয়ার স্যামসাংয়ের জয়েন্ট ভেঞ্চার ‘এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম’।
বেবিচকের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন টার্মিনাল চালুর পর শাহজালাল বিমানবন্দরের সক্ষমতা আড়াই গুণ বাড়বে।
Loading...