কুয়াশায় ফ্লাইট ওঠানামার সংকট কাটাতে আইএলএস-২ স্থাপনের কাজ শেষের পথে

Loading...

কুয়াশায় ফ্লাইট ওঠানামার সংকট কাটাতে আইএলএস-২ স্থাপনের কাজ শেষের পথে

ঘন কুয়াশায় ফ্লাইট ওঠানামা বিঘ্নিত হওয়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নৈমিত্তিক ঘটনা। আসন্ন শীতে এ অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

তারা বলছেন, ঘন কুয়াশা বা বৈরী আবহাওয়ায় বিমান চলাচল বিঘ্নিত হওয়া এড়াতে ইনস্ট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম বা আইএলএস প্রযুক্তির মানোন্নয়ন করা হচ্ছে, যার কাজ শেষের পথে। আইএলএস ক্যাটাগরি-১-এর পরিবর্তে স্থাপন করা হচ্ছে ক্যাটাগরি-২।

Loading...

শাহজালাল বিমানবন্দরে আইএলএস-২ চালুর বিষয়ে চলতি নভেম্বরেই বেবিচক ঘোষণা দিতে পারে বলে জানা গেছে।

ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার বিমানবন্দরেও আইএলএস প্রযুক্তির উন্নয়ন করা হচ্ছে। ফলে কুয়াশার মধ্যেও ফ্লাইট ওঠানামার যে সংকট রয়েছে তা কেটে যাবে।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আইএলএস প্রযুক্তির উন্নয়নের অংশ হিসেবে বর্তমানে বিমানবন্দরে রানওয়ের ‘লাইটিং সিস্টেম’ রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে।

কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

এজন্য গত ৮ নভেম্বর থেকে রাত ১টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে রানওয়ের সব কার্যক্রম ও ফ্লাইট ওঠানামা। রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি আজকের মধ্যেই শেষ হতে পারে।

Loading...

সাধারণত খালি চোখে রানওয়ের অবস্থান শনাক্ত করে উড়োজাহাজ অবতরণ করেন বৈমানিকরা। অবতরণের জন্য ন্যূনতম ৫০০ মিটার দৃষ্টিসীমা প্রয়োজন হয়। কুয়াশা বা বৈরী আবহাওয়ার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে এলে রানওয়ের অবস্থান শনাক্তের জন্য ব্যবহার করা হয় আইএলএস প্রযুক্তি।

বৈরী আবহাওয়ায় উড়োজাহাজ ওঠানামার জটিলতা নিরসনে ১৯৮০ সালের দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে আইএলএস-১ স্থাপন করা হয়। যদিও পুরনো এ প্রযুক্তি ঘন কুয়াশায় খুব একটা কাজে আসে না। ফলে প্রতি শীতেই বিঘ্নিত হচ্ছে উড়োজাহাজ চলাচল।

Loading...

এতে আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলোর পরিচালন ব্যয় যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। গত শীতেও রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত একাধিকবার বন্ধ থেকেছে উড়োজাহাজ চলাচল।

অন্যদিকে ঢাকায় নামতে না পেরে প্রতিবেশী ভারত কিংবা দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরে ফ্লাইট ঘুরিয়ে (ডাইভার্ট) দেয়ার একাধিক ঘটনাও ঘটে।

ঢাকায় উড়োজাহাজ ওঠানামার ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা কমে আসবে বলে আশা করছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া।

Loading...

বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘‌আইএলএস স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আমাদের পক্ষ থেকে সব কাজ শেষ। শুধু একটা বিদেশী অবজারভেশন ফ্লাইট লাগে। আমরা সে অপেক্ষাই করছি। অবজারভেশন শেষ হলেও আইএলএসের কাজ আমরা পুরোপুরি শুরু করতে পারব।

আমরা আশা করছি, নভেম্বরের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে আইএলএস-২ স্থাপনের বিষয়য়টি ঘোষণা দিতে পারব। তবে সবকিছু অবজারভেশন ফ্লাইটের ওপর নির্ভর করছে।’

Loading...

বর্তমানে ‌কুয়াশার কারণে বিমান থেকে রানওয়ের দৃষ্টিসীমা দেড় হাজার মিটারের নিচে নেমে গেলেই শাহজালালে উড়োজাহাজ অবতরণে সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন আকাশ পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, বর্তমানে শাহজালালের এ প্রযুক্তি ক্যাটাগরি-২-এ উন্নীত করা হচ্ছে। এটা হয়ে গেলে ৩০০-৪০০ মিটার দৃষ্টিসীমার মধ্যেও বিমান অবতরণ করতে পারবে।

তবে ঘন কুয়াশা বা বৈরী আবহাওয়ায় অনেক সময় বৈমানিকের দৃষ্টিসীমা ৫০ থেকে শূন্য মিটারে নেমে আসে। তখন আইএলএস-২ প্রযুক্তিও আর কাজ করে না। প্রয়োজন হয় আইএলএস-৩ প্রযুক্তির।

Loading...

শাহজালাল বিমানবন্দরের পুরনো আইএলএস প্রযুক্তির কারণে প্রতি শীতেই ভোগান্তি পড়ছেন যাত্রীরা। একই সঙ্গে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলো।

ঢাকায় একটি বিমান অবতরণে ব্যর্থ হয়ে অন্য বিমানবন্দরে গেলে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অ্যারোনটিক্যাল চার্জ। জ্বালানি বাবদ খরচ হচ্ছে বাড়তি অর্থ। অনেক সময় যাত্রীর খাবার এবং হোটেলেরও প্রয়োজন হচ্ছে। এ খাতেও লাগছে বাড়তি অর্থ।

Loading...

শাহজালাল বিমানবন্দরের পুরনো আইএলএস প্রযুক্তির কারণে আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলো বছরে অন্তত দুই মাস কঠিন সময় অতিক্রম করে বলে জানিয়েছেন আকাশ পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা।

ফলে শাহজালালসহ দেশের সবক’টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইএলএস ক্যাটাগরি-৩ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বণিক বার্তা

Loading...

Loading