‘এখানে থাকলে আমরা মরেই যাব,’ কাতারে কাজ না পাওয়া পাঁচ প্রবাসী
Loading...

‘এখানে থাকলে আমরা মরেই যাব,’ কাতারে কাজ না পাওয়া পাঁচ প্রবাসী
‘দেশে ফিইর্যা এক বেলা খাইয়াম, আরেক বেলা না খাইয়া থাহাম, তারপরও এখানে থাকতে চাই না। এখানে পারছি না খাইতে না পারছি ঘুমাইতে। ঘুরাফেরা তো অসম্ভব। এভাবে থাকলে মইর্যা যাইয়াম।
’ কাতারে থাকা পাঁচ প্রবাসী দেশে ফেরার জন্য এভাবেই আকুতি করেছেন।
এই চার প্রবাসী ‘সুইসলাইন ওভারসীজ লিমিটেড’ এজেন্সির মাধ্যমে গত বছরের ২০ নভেম্বর কাজের জন্য কাতারে যান। কাতারে কাজ দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এখনও কাজ না পেয়ে অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন।
আরও আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের হোয়াটসঅ্যপে জয়েন করুন
Loading...
ভুক্তভোগীরা হলেন-ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আঁচারগাও ইউনিয়নের ধরগাও গ্রামের মো. আতাউর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান, ধারগাঁও বিলপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে অলিউল্লাহ(২০), মাগুরার শালিখা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের রফিকুলের ছেলে সোয়াইব হোসেন(২০),নরসিংদীর রায়পুরারর হাটুভাঙ্গা গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে আল-আমীন(২১), মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে নিলু হোসেন(২২)।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর এ প্রতিবেদকের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে কথা হয় সকলের। কথা বলতে গিয়ে সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা সবাই দেশে ফেরারর আকুতি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, বাংলাদেশের ‘সুইসলাইন ওভারসীজ লিমিটেড’ এর মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা খরচে গত বছরের ২০ নভেম্বর কাতারের দোহা পৌঁছান তারা। কথা ছিল কাতারের সেনাবাহিনী ক্যাম্পে ক্লিনার হিসাবে কাজ দিবে। সেখানে প্রতিমাসে পাবেন ১৩’শ রিয়াল। সেই সঙ্গে থাকা-খাওয়া কোম্পানির। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর পাসপোর্ট কোম্পানির কাছে জমা থাকলেও কোনো কাজ না দিয়ে সাগর বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তি একটি বাসায় নিয়ে রাখেন।
যারা কাতারে চাকরি খুঁজছেন তাদের জন্য কিছু চাকরির খবর
Loading...
বেশ কয়েক দিন চলে গেলেও তাদের দেওয়া হয়নি কথামতো কাজ। মাঝে মধ্যে কিছু টাকা দেওয়া হতো খাবারের জন্য। এ অবস্থায় দুই মাস হলে ওই বাসার মালিক তাদের চলে যেতে বলেন। পরে বাধ্য হয়ে দেশে থেকে টাকা নিয়ে অন্য বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানেই থাকছেন।
তাদের মধ্যে মাগুরার শালিখা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি একজন দিনমজুর। তার তিন ছেলে দুই মেয়ে। নিজের শরীর ভালো না থাকায় ছেলে সোয়াইব হোসেনের পড়ালেখা বাদ দিয়ে একমাত্র সম্বল একখণ্ড জমি বিক্রি ও ধারদেনা করে ৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করে স্থানীয় এক ব্যক্তি আব্দুল আজিজের মাধ্যমে কাতারে পাঠান। পরে সেখানে কয়েকমাস গেলেও কাজ না পেয়ে ছেলে কান্নাকাটি করে ফোন দেয়। এ অবস্থায় খাবার কষ্টের জন্য ফের বাড়ি থেকে কয়েক দফায় কমপক্ষে লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। এখন তিনি নিঃস্ব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘সুইসলাইন ওভারসীজ লিমিটেড’এর সিইও মো.হাসিবুর রহমান শফিক কালের কণ্ঠকে বলেন,আমার এজেন্সি থেকে সব কিছুই ওকে ছিল। তার মধ্যে যাদেরকে পাঠানো হয়েছিল তারাই কাজে যোগ দেননি। বলা হয়েছিল, ইনডোর ক্লিনার হিসেবে কাজ করতে। কিন্তু তাদের অনিহার কারণেই এক ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কাজ দিতে কিছুটা সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। তবে সবকিছু কয়েকদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে দাবি করেন।
Loading...
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান শাখা-৩ শাখার উপ- সচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ার কালের কণ্ঠকে জানান, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার দেশের এজেন্টের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরও খোঁজ নেওয়া হবে।
আরও খবর
Loading...
