এক যুগেই লাশ হয়ে ফিরেছেন ৪২ হাজার প্রবাসী
Loading...

এক যুগেই লাশ হয়ে ফিরেছেন ৪২ হাজার প্রবাসী
ভাগ্য বদলানোর আশায় প্রতিবছর কয়েক লাখ প্রবাসী বিদেশি পাড়ি জমায়। সুস্থ শরীরে বিদেশে গেলেও প্রত্যেক মাসে কয়েকশ প্রবাসী লাশ হয়ে দেশে ফিরেন। আর বছর শেষে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় কয়েক হাজারে। শুধু গত বছরেই ৪ হাজার ৮১৩ জন শ্রমিক লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে বিষয়টি জানা গেছে। আর গত ১১ বছরে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৩৭ হাজার ৬৭ জন প্রবাসী শ্রমিক। এদিকে চলতি বছরের প্রথম মাসে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছে ৪৪৭ প্রবাসীর লাশ।
কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন
Loading...
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি মরদেহ দেশে আসে।
মৃতদের সঙ্গে আসা নথিপত্র অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি প্রবাসী মারা যান মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত (ব্রেইন স্ট্রোক) কারণে। এদের একটা বড় অংশই মধ্যবসয়ী কিংবা তরুণ। এ ছাড়াও হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা কিংবা প্রতিপক্ষের হাতেও খুন হন বাংলাদেশিরা।
তবে তরুণ কিংবা মধ্যবয়সে কেন এতো বিপুল সংখ্যক প্রবাসী স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুসন্ধান হয়নি।
কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর
Loading...
প্রবাসী বাংলাদেশি, মৃতদের স্বজন ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য মূলত মরু আবহাওয়ার দেশ। প্রচণ্ড গরমে প্রতিকূল পরিবেশে অদক্ষ এই বাংলাদেশিরা ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকেন। একদিকে প্রতিকূল পরিবেশ, অন্যদিকে অমানুষিক পরিশ্রম, ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকা, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং সব মিলিয়ে মানসিক চাপের কারণেই সাধারণত স্ট্রোক বা হৃদরাগের মতো ঘটনা ঘটে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৮১৩, ২০২৩ সালে ৪ হাজার ৫৫২জন, ২০২২ সালে ৩ হাজার ৯০৪জন, ২০২১ সালে ৩ হাজার ৮১৮ জন, ২০২০ সালে ৩ হাজার ১৯ জন ও ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৩৪ জন, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৫৭ জন, ২০১৭ সালে ২ হাজার ৯১৯ জন, ২০১৬ সালে ২ হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮৩১, ২০১৪ সালে ২ হাজার ৮৭২ এবং ২০১৩ সালে ৩ হাজার ৭৬ জন প্রবাসীর মরদেহ দেশে এসেছে। গত ২০১৪ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৪২ হাজার ৩২৭ জন প্রবাসী শ্রমিক।
প্রবাসীদের মরদেহের সঙ্গে যে নথিপত্র আসে সে অনুযায়ী মৃত্যুর কারণ লিখে রাখা হয় বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কে। কীভাবে এতো প্রবাসী মারা যাচ্ছে সেটা বোঝার জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আসা ৩০৭ জন প্রবাসীর লাশের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করেন তারা।
ফেসবুকে আমাদের সাথে থাকতে লাইক দিন এখানে
Loading...
এতে দেখা গেছে, ১৭৬ জনই (৫৬ শতাংশ) মারা গেছেন স্ট্রোকে যারা তরুণ কিংবা মধ্যবয়সী। এরপর ৬২ জনের (২০ শতাংশ) মৃত্যুর কারণ হৃদরোগে আক্রান্ত বা স্বাভাবিক মৃত্যু। কর্মক্ষেত্রে বা বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৫৭ জন (১৮ শতাংশ)। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১২ জন (৪ শতাংশ)। আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন। বাকি ২জন খুন। শুধু এক মাস নয়, গত ১৪ বছরের বিভিন্ন সময়ের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ একইরকম তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও খবর
Loading...
