ডিসেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত এক্সিট ভিসায় বাংলাদেশ ছেড়েছেন ১২ হাজারের বেশি অবৈধ বিদেশি

Loading...

ডিসেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত এক্সিট ভিসায় বাংলাদেশ ছেড়েছেন ১২ হাজারের বেশি অবৈধ বিদেশি

এখনও প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১২,০০০ বিদেশি নাগরিক এক্সিট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। এসব ব্যক্তি বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন।

Loading...

বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশিদের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনার পর অল্প সময়ের মধ্যেই বড় সংখ্যক অবৈধ বিদেশি নাগরিক দেশ ছাড়লেন।

এখনও প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব অবৈধ নাগরিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে সোমবার (৩ জানুয়ারি) ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

এর আগে, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত বা কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের বৈধতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি যেসব দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানে বিদেশি নাগরিকরা কর্মরত রয়েছেন, সেইসব প্রতিষ্ঠানকেও বিদেশি নাগরিকদের সহযোগিতা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

Loading...

ওই বিজ্ঞেপ্তিতে অবৈধভাবে অবস্থানকারী এবং অবৈধভাবে কাজ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এরপর ১০ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো: খোদা বখস চৌধুরী, দু’জনে স্বাক্ষর করে একই বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন।

কিন্তু ওই সময় কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে– এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ ছিল না। এরপর ২৬ ডিসেম্বর আরেকবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের বৈধভাবে অবস্থানের জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “প্রায় ৪,৫০০ বিদেশি নাগরিক বৈধভাবে অবস্থানের জন্য বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আবেদন করেছেন। প্রকৃত অবৈধ নাগরিকের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক কম। বর্তমানে এসব আবেদন যাচাই-বাছাই হচ্ছে।”

কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

এদিকে, গত ৮ ডিসেম্বরের পর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর এবং অন্যান্য স্থলবন্দর থেকে এক্সিট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন ১২ হাজারের বেশি নাগরিক। এসব নাগরিক বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানের জন্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থল সীমান্ত দিয়ে অনেকে পার্শ্ববর্তী বিদেশি দেশেও চলে গেছেন বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য এসেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন কর্মকর্তা বলেন, “তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৩৩ হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। এরা বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করছেন। কেউ কেউ প্রকল্পে কাজ করছেন। অনেকে ব্যবসা করছেন।”

Loading...

তিনি বলেন, “এসব ব্যক্তি অবৈধভাবে থাকার কারণে নিরাপত্তা বিষয়ক হুমকি যেমন রয়েছে, তেমনি এসব ব্যক্তি বাংলাদেশে চাকরি বা ব্যবসা করলে যেভাবে কর পরিশোধ করার কথা– তার কিছুই করছেন না। ফলে অবৈধ বিদেশিদের জন্য নিরাপত্তা যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি রাজস্বও হারাচ্ছে দেশ।”

ইতোমধ্যে কিছু অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এখনও কঠোর কোনো অভিযান চালানো হচ্ছে না।

অবৈধ বিদেশিদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে টাস্কফোর্স গঠন

সোমবার (৩ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবৈধভাবে অবস্থানকারী নাগরিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে ১১ সদস্য বিশিষ্ট টাস্কফোর্স গঠন করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক করা হয়েছে।

বর্তমানে এই দায়িত্বে আছেন অতিরিক্ত সচিব কাজী গোলাম তৌসিফ। সোমবার তিনি টিবিএসকে এসবির তথ্যের বরাত দিয়ে বলেন, “বিদেশি নাগরিকদের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশের থাকতে হবে এই বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশ ছেড়ে নিজের দেশে ফিরে গেছেন। বিমানবন্দর ও অন্যান্য বন্দরে এসব নাগরিক এক্সিট ভিসা নিয়েছেন।”

তিনি বলেন, “এসবির তথ্য অনুযায়ী, এখনও দেশে অনেক বিদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। তাদের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।”

Loading...

কমিটির সদস্যরা হলেন– প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার), জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-১ অধিশাখার যুগ্মসচিব, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ইমিগ্রেশন), ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর পরিচালক (অপারেশন উইং), প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো’র পরিচালক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক (বহিঃসম্পর্ক সংযোগ উইং) এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের পরিচালক (এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স এন্ড লিয়াঁজো ব্যুরো)।

টাস্কফোর্স বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে গৃহীত সার্বিক কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন ও পরামর্শ প্রদান করবে।

আরও খবর

The Business Standard

Loading...

Loading