অক্টোবর-নভেম্বরে জনশক্তি রপ্তানি চাঙা হবে কি
Loading...
অক্টোবর-নভেম্বরে জনশক্তি রপ্তানি চাঙা হবে কি
জনশক্তি রপ্তানিতে ধস নেমেছে। চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম থেকে বিদেশ গিয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৮৩৬ জন। এর আগের ৬ মাসে চট্টগ্রাম থেকেই বিদেশ গেছেন ৩৩ হাজার ৯১৫ জন। চট্টগ্রাম থেকে মূলত: মধ্যপ্রাচ্যেই বেশি মানুষ কর্মের খোঁজে গিয়ে থাকে। কিন্তু নানামুখী জটিলতায় ওমান এবং আরব আমিরাতের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে পড়ায় দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকেও বিদেশ যাওয়ার পরিমান কমেছে। তবে এই ধস কাটিয়ে আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে চাঙা হওয়ার আভাস দিচ্ছেন জনশক্তি রপ্তানি সূত্রগুলো।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনে মিছিল করাকে কেন্দ্র করে বন্ধ করে দেওয়া শ্রম বাজার এখনো খুলে দেয়নি আরব অমিরাত। আগে থেকে গণহারে শ্রমিক ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে ওমান এবং সৌদি আরব। কাতার-জর্দান-কুয়েতের শ্রম বাজারের পরিস্থিতিও অনুকূলে নয়। ফলে মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিকের সংখ্যা কমছে।
Loading...
জনশক্তি রপ্তানির তথ্য মতে, চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশে কাজের সূত্রে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৬৫৫ জন। অবশ্য জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ১৮ হাজার ২১৫ জন এসব দেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। অর্থ্যাৎ, চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে।
তবে এই কমে যাওয়ার চিত্র শুধু চট্টগ্রামের ক্ষেত্রেই নয় জানিয়ে জেলা কর্মসংস্থা ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সারা দেশেই গত দুই মাসে জনশক্তি রপ্তানি কমেছে। ২০২৩ সালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১৩ লাখ ৮১ হাজার শ্রমিক কাজের সন্ধানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের প্রথম ৬ মাসে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৮ জনশক্তি রপ্তানির বিপরীতে জুলাইতে ৮৫ হাজার ৪৭৮ জন এবং আগস্টে ৬১ হাজার ৪১৩ জন শ্রমিক কাজের সূত্রে বিদেশ যেতে পেরেছেন। এতেই বুঝা যায় গত দুই মাসে জনশক্তি রপ্তানি সারা দেশেই কমেছে।’
Loading...
আগামীতে জনশক্তি রপ্তানি বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কাতার সেখানকার অবৈধ অভিবাসিদের বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে। এখন সেখানকার অবৈধরা বৈধ হতে পারলে সেখানে শ্রম বাজার উন্মুক্ত হতে পারে। যেহেতু কাতার ও আবুধাবিতে চট্টগ্রামের শ্রমিকরা বেশি গিয়ে থাকে তাই এখানকার মানুষের মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে প্রবেশের সামনে একটি সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে।’
সুযোগের কথা স্বীকার করে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, ‘কাতারে একটি সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সেইসাথে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোতেও শ্রম বাজার বাড়তে পারে। এতে দেশে রেমিট্যান্স আসা বাড়বে।’
Loading...
তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চট্টগ্রামের শ্রমিকদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর আমরা এই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।
জেলা কর্মসংস্থান থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেখা যায়, ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম থেকে সৌদি আরবে ২১ হাজার ৭১৮ জন, ওমানে ১৯ হাজার ৮৭০, আবুধাবিতে ১৩ হাজার ৫০০, কাতারে ৭ হাজার ৩১, জর্দানে ৩২, কুয়েতে ৮৬১, লেবাননে ২২ জন শ্রমিক গিয়েছে। অপরদিকে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল সৌদি আরবে ১৮ হাজার ৯২৩, ওমানে ৩১ হাজার ৫৭৭, আবুধাবিতে ১২ হাজার ৮৪১, কাতারে ৩ হাজার ৫৬১, জর্দানে ১৬, কুয়েতে ৭০৮ জন শ্রমিক গিয়েছে। অপরদিকে জুলাই মাসে সৌদি আরবে ১ হাজার ৬৬৭ জন, ওমানে শূন্য, আবুধাবিতে ৫৯৩ জন, কাতারে ৪৭৩, জর্দানে ২, কুয়েতে ১১৭ ও লেবাননে ৪ জন গিয়েছে। এছাড়া আগস্ট মাসে সৌদি আরবে ১ হাজার ৫৩ জন, ওমানে শূন্য, আবুধাবিতে ৯৭৮, কাতারে ৬২২, জর্দানে ৫ জন, কুয়েতে ১৪১ জন ও লেবাননে শূন্য জন শ্রমিক গিয়েছে।
Loading...
এদিকে জনশক্তি রপ্তানি কমলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বেশি আসছে দেশে। আগস্ট মাসে ২শ ২২ কোটি মার্কিন ডলার এবং সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ দিনে ১১৬ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। ২০২২—২৩ অর্থ বছরে ২১ দশমিক ছয় এক বিলিয়ন এবং ২০২৩—২৪ অর্থ বছরে ২৩ দশমিক নয় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।
Loading...